অবশেষে অনুমতি পেলো স্থগিত হওয়া লালন স্মরণোৎসব
হেফাজতে ইসলাম ও কওমী ওলামা পরিষদের নেতাকর্মীদের আপত্তির মুখে স্থগিত হওয়া টাঙ্গাইলের মধুপুরে লালন স্মরণোৎসবের তারিখ অবশেষে সমঝোতার মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানটি আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি (রবিবার) মধুপুর অডিটরিয়ামে রাত সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে সমঝোতা বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এরআগে গত ১২ ফেব্রুয়ারি মধুপুর বাসস্ট্যান্ডে লালন স্মরণোৎসব হওয়ার কথা ছিল। হেফাজতে ইসলাম ও কওমী ওলামা পরিষদের আপত্তির মুখে অনুষ্ঠানটি স্থগিত ঘোষণা করে আয়োজক কমিটি।
জানা যায়, লালন সাঁইয়ের ১৩৪তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে গত বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টায় মধুপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মধুপুর লালন সংঘের আয়োজনে লালন স্মরণোৎসব-২০২৫ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জুবায়ের হোসেনের উপস্থিত থাকার কথা ছিল। এছাড়াও সহকারী পুলিশ সুপার (মধুপুর-সার্কেল), মধুপুর থানার ওসিসহ একাধিক শীর্ষ ব্যক্তিকে অতিথি করা হয়। কিন্তু হেফাজতে ইসলাম ও কওমী ওলামা পরিষদের নেতৃবৃৃন্দ লালন উৎসবটি ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করে অনুষ্ঠান বন্ধের দাবি তোলেন। এক পর্যায়ে তাদের আপত্তির মুুখে অনুষ্ঠানটি স্থগিত ঘোষণা করে আয়োজক কমিটি। বিষয়টি নিয়ে অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলাট্রিবিউনসহ একাধিক অনলাইন ও পত্রিকায় খবর প্রকাশ হয়। এরপর থেকে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
এদিকে, বিষয়টি নিয়ে সন্ধায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে হেফাজত ইসলাম, কওমী ওলামা পরিষদ, উপজেলা বিএনপি ও লালন সংঘের প্রতিনিধি দলের সাথে সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জুবায়ের হোসেন, মেজর শোয়েব, উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাকির হোসেন সরকার, মধুপুর লালন সংঘের উপদেষ্টা এস এম শহীদ, সাধারণ সম্পাদক গৌতম চন্দ্র সাহা, অনুষ্ঠান উদযাপন কমিটির আহবায়ক সবুজ মিয়া, উপজেলা হেফাজতে ইসলাম মধুপুরের সভাপতি মুফতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মাও. মাহমুদউল্যাহ, ক্বারী মোদাচ্ছের হোসেন, গণমাধ্যম কর্মী আনোয়ার সাদাৎ ইমরান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আগামী রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠানটি মধুপুর অডিটরিয়ামে রাত সাড়ে ৮টায় আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়।
অনুষ্ঠানটির আয়োজক কমিটির আহবায়ক ও মো. সবুজ মিয়া বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে বৈঠকে বসা হয়েছিল। সেখানে হেফাজতে ইসলামসহ কয়েকটি দলের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সমঝোতার মাধ্যমে আগামী রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠানটির আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈঠকে হেফাজতে ইসলাম প্রতিশ্রুতি দেয় অনুষ্ঠান আয়োজনে তারা কোন বাঁধার সৃষ্টি করবে না। মধুপুর লালন সংঘ থেকে বিতর্কিত বক্তব্য, তথ্য ও সঙ্গীত উপস্থাপিত হবে না মর্মেও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জুবায়ের হোসেন বলেন, ‘হেফাজতে ইসলাম, বিএনপি, আয়োজক কমিটি, সেনাবাহিনী ও স্থানীয় সাংবাদিকদের নিয়ে বৈঠকে বসা হয়েছিল। এসময় সমঝোতার মাধ্যমে স্থগিত হওয়া লালন স্মরণোৎসবের নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। বড় আয়োজনের মধ্যদিয়েই অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হবে।’
এম.কন্ঠ/১৫ ফেব্রুয়ারী /এম.টি