অন্তবর্তীকালীন সরকার, নির্বাচিত সরকারের মতো পাঁচ বছর থাকার চেষ্টা করলে সেটা ভুল হবে…আহমেদ আযম
বিএনপির ভাইস আহমেদ আযম খান বলেছেন, আজকে সরকারের মধ্যে সমন্বয়হীনতা দেখছি। আজকে সরকারের মধ্যে সিদ্ধান্তহীনতা দেখছি। সরকারের একজন উপদেষ্টা এক রকমের কথা বলেন। আরেক জন উপদেষ্টা আরেক রকমের কথা বলেন। আমরা বলতে চাই এই সরকারের যেমন ব্যর্থ হওয়ার সুযোগ নেই। তেমনি এই সরকারের সমন্বয়হীনতা আমরা দেখতে চাই না। প্রতিটি পদে পদে বিএনপিসহ গণতান্ত্রিক শক্তির সাথে আপনারা আলোচনা করুন। আপনারা কখনও দেশ পরিচালনায় আসেননি বলে আপনাদের যে সমন্বয়হীনতা, আমরা সেটাকে সমর্থন দিয়ে, আমাদের অভিজ্ঞতা দিয়ে সেটা সফল করবো। কিন্তু কোন ভাবেই আপনারা নিজেদের অসহহায় মনে না করেন। আমরা আপনাদের পাশে আছি। কিন্তু আপনারা যদি মনে করেন আপনাদের অবারিত সময় তাহলে কিন্তু ভুল হয়ে যাবে। আপনারা যত দ্রুত সম্ভব, প্রয়োজনীয় সংস্কার করে নির্বাচন দিন। আপনাদেরকে সেই সময় আমরা দেবো, জনগণও দেবে। কিন্তু আপনারা অন্তবর্র্তীকালীন সরকার নির্বাচিত সরকারের মতো পাঁচ বছর থাকবার চেষ্টা করেন, সেটা ভুল হবে। সেটা দেশের জন্য বিপর্যের হবে।
শনিবার দুপুরে টাঙ্গাইলে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের দ্বি বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা অ্যাডভোকেট বার সমিতির অডিটোরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি বলেন।
আমরা যোক্তিক সময়ের কথা বলছি। যোক্তিক সময়ের পরেই আপনার নির্বাচন দিবেন। যে সার্চ কমিটি করেছেন, সেই সার্চ কমিটির মধ্য দিয়ে একটি অবাধ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন করুন।
তিনি আরও বলেন, আমরা প্রশাসনে অসস্থিরতা দেখছি। প্রশাসনের ভিতরে অসস্থিরতা দূর করুন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অসহযোগিতা দেখছি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অস্থিরতা দূর করুন। দেশ বিদেশে নানা ষড়যন্ত্র চোখে পড়ছে। দেশ বিদেশের ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করার জন্য আমরা পুরো জাতি ঐক্যবদ্ধ আছি। প্রফেসর ইউনুস সাহেব, আপনি সেই ষড়যন্ত্র মোকাবেলার করা জন্য সারা বিশে^ আপনার যে দূতাবাস গুলো আছে। সেই দূতাবাস গুলোকে কাজ করতে বলুন। দূতাবাস গুলো নিষ্ক্রিয় অবস্থায় আছে। যে দূতবাস গুলো নিষ্ক্রিয় অবস্থায় আছে, সেই দূতাবাসের লোক গুলোকে পরিবর্তন করুন। এই দূতাবাস গুলো মধ্য দিয়ে সারা বিশে^ বাংলাদেশ যে একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফিরেছে, বাংলাদেশ যে সকল ধর্ম, বর্ণের যে একটা অভয়ারণ্য, বাংলাদেশ যে সকল ধর্মের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে, বাংলাদেশ যে সংখ্যা গরিষ্ঠ নয়, সকল ধর্মের মানুষ আমরা এক সাথে এই বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। এই ম্যাসেজ যে সারা বিশে^ যায়।
আহমেদ আযম বলেন, একটা দেশে যাওয়ার কারনে আমাদের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে। এরকম দ্বিতীয় ঘটনা আমরা দেখতে চাই না। সেই জন্য আপনাদের বলবো, আপনাদের যে গতি, সেটা অনেক বাড়াতে হবে। আপনারা দ্রুত নির্বাচনের রোড ম্যাপ ঘোষণা করুন। রোড ম্যাপে যেন নয় মাস বা এক বছরের উপরে সময় না যায়। জনগণ তাহলে হতাশ হয়ে পড়বে তখন আপনার ব্যর্থ হয়ে যাবে। তখন আপনাদের ব্যর্থতা চাই না। আপনাদের মধ্য দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক সরকার আসবে। আপনারাও সম্মানের সাথে বিদায় নিবেন।
তিনি বিগত বছরের বিষয় তুলে ধরে বলেন, গণতন্ত্র ও নির্বাচনের কথা বলায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা দিয়েছে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা। এছাড়াও গণতন্ত্র ও নির্বাচনের কথা বলাতে বিএনপির ৬০ লাখ নেতাকর্মীর নামে মামলা দেয়া হয়েছে। তারপরও বিএনপি দমে যায়নি। ৫ আগস্টের যে অভ্যত্থান, এর পেছনের নায়ক তারেক রহমান। এই অভ্যত্থানের ৪২২ জন বিএনপির নেতাকর্মী শাহাদত বরণ করেছেন। এছাড়াও গত ১৫ বছর বিএনপির নেতাকর্মীদের রক্তে রাজপথ রাঙানো থাকতো। তারপরও বিএনপির নেতাকর্মীরা পিছু হটেনি।
সম্মেলনের উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসতিয়াক আজিজ উলফাত। জেলা মুক্তিযোদ্ধা দলের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল খালেক মন্ডলের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিভাগীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটো, কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল হালিম, মুক্তিযোদ্ধা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন, সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল।
এম.কন্ঠ/ ১৬ নভেম্বর /এম.টি