ঢাকা ১০:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ
টাঙ্গাইলে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষে আলোচনাসভা ঘাটাইলে পৃথক স্থান থেকে তিন জনের লাশ উদ্ধার গণ অধিকার পরিষদ ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে…শাকিলউজ্জামান টাঙ্গাইলে পরিবহন খাত ছিল বড় মনিরের মুঠোয় আনুহলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ টাঙ্গাইলে শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন এলেঙ্গা শামছুল হক মহাবিদ্যালয় কলেজের জমি প্রতারণা করে অধ্যক্ষের যোগসাজশে লিখে নিয়েছেন স্ত্রী মীনা টাঙ্গাইলে কলেজছাত্র হত্যা মামলায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার টাঙ্গাইলে শহীদদের স্মরণে দোয়া মাহফিল ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানিয়ে টাঙ্গাইলে বিএনপির সংবাদ সম্মেলনে

রঙতুলির আঁচড়ে টাঙ্গাইল শহর

মোজাম্মেল হক :
প্রকাশ: ০৫:৫৬:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৪

রঙতুলির আঁচড়ে ঢেকে গেছে টাঙ্গাইল শহরের অপরিচ্ছন্ন দেয়াল। “স্বাধীন বাংলার স্বাধীন গান, রক্ত দিয়েছি, দিয়েছি প্রাণ, ৫২ তো ভুলি নাই, ২৪ কে ভুলবো কেন?, স্বপ্ন এখন দেশ ছাড়ার নয়, স্বপ্ন এখন দেশ গড়ার, ছাত্র শক্তির আন্দোলনে নতুন বাংলার জন্ম, পানি লাগবে পানি? মীর মগ্ধ, এবার স্বাধীনতা রক্ষা করার পালা, ৩৬ জুলাই, স্বাধীনতা এনেছি সংস্কারও আনবো, অরুণ পাতের তরুণ দল, গুজবে কান দিবেন না, এভাবেও শুরু করা যায়, শোনো মহাজন আমরা অনেক জন, আমাদের ভাগ্য আমাদেরই গড়ে নিতে হবে, পিন্ডির গোলামি ছিন্ন করতে হবে-মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, আমারে যাইতে দেন না! আমার ছোট বোন আছে, বাংলার বুকে বিজয়ের পতাকা উড়ুক চিরকাল, হাল ছেড়োনা বন্ধু বরং কন্ঠ ছাড়ো জোড়ে’ এ রকম বাক্য ছাড়াও আছে রঙতুলির আঁচড়ে বিভিন্ন যুদ্ধজয়ের চিত্র, ছাত্রজনতার ঐক্যবদ্ধতা, স্বৈরাচার থেকে ওজনে ভারী ছাত্রজনতার চিত্র, মুসলিম, হিন্দু,বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানের একত্রতা, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা, মগ্ধু পানি বিতরণ, ভাষা সৈনিকদের স্মৃতিস্থম্ভ শহীদ মিনার, টাঙ্গাইলের মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানী এবং বুক উঁচিয়ে দুই হাত ছাড়িয়ে পুলিশের গুলিকে তোক্কায়া না করা যুদ্ধ জয়ের চিত্র।

শহরের নিরালা মোড় থেকে শুরু হয়ে জেলা সদর সড়কের বটতলা পর্যন্ত দু’পাশের অপরিচ্ছন্ন দেয়াল এরকম রঙতুলির ছোঁয়ায় সৌন্দয্যে হারিয়ে যাওয়ার চিত্র। ছাত্র আন্দোলনে যুদ্ধ জয়ের পর ছাত্র জনতা শুরুতে শহরের সবচেয়ে বড় সমস্যা যানজট নিরসনে ট্রাফিক আইনের যথাযথ ব্যবহার কাজে লাগিয়ে যানজট দূর করার চেষ্টা করেছেন।

যুদ্ধ জয় করতে ইট পাটকেল ও লাঠি ব্যবহার করে শহরকে অপরিচ্ছন্ন করেছিলেন। যুদ্ধ জয়ের পর সেই শহরকে একদিনেই ঝাড়ু দিয়ে পরিস্কার করেছেন। এরপর শিক্ষাথীরা শুরু করছেন শহরের ময়লা ও অপরিচ্ছন্ন দেয়ালগুলো। শুরুটা ১০ আগষ্ট থেকে। শহরের ময়লা দেয়ালকে প্রথমে সাদা রঙ করে পরমুহুর্তে যুদ্ধজয়ের সময়কে স্মৃতিময় রাখতে দেয়ালে দেয়ালে দেয়ালিকা।

বিন্দুবাসিনী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর ছাত্রী আদ্রিকা তাবাসসুম তুবা ও সাবিহা ইসলাম তোয়া বলেন’ স্বৈরাচারী শাসনের সময় শহরের দেয়ালগুলি বিভিন্ন রাজনীতি দলের পোষ্টার কিংবা চিকা লেখায় ময়লা ছিলো। আমরা সেই ময়লাযুক্ত দেয়ালগুলি পরিস্কার করে দেয়ালের রঙে নতুন বাংলাদেশের রুপ তুলে ধরার চেষ্টা করছি’।

সৃষ্টি একাডেমীর অষ্টম শ্রেনীর ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসি মৌরি ও ফাইজা ইসলাম বলেন’ আমরা স্বাধীনতার কথা লেখছি, শহীদদের কথা লেখছি। পরের প্রজম্ম জানি জানতে পারে এ বিজয়ের কথা,। এ স্বৈরাচারী সরকারের পতনের কথা। আমরা রঙতুলির রঙে নতুন বাংলাদেশের টাঙ্গাইল শহরকে রাঙিয়ে তুলতে চাই’।

কুমুদিনী কলেজের ছাত্রী রাশিদা সুলতানা রোজী, সাদিয়া আক্তার তারা, তরী ও চৈতি রায় বলেন’ আমরা নতুন করে স্বৈরাচারী শাসনের পতন ঘটিয়ে দেশকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছি। আমরা নতুন বাংলাদেশের নতুন রুপ তুলে ধরার মাধ্যমে গণতান্দ্রিক দেশ কামনা করছি’।

সরকারী সা’দত কলেজের গনিত বিভাগের ছাত্র আব্দুস সাত্তার বলেন’ দেয়ালে লিখন এখন সুন্দর লাগছে, আগে বিভিন্ন রাজনীতিসহ অগোছালো লেখা ছিলো। যা দেখতে ময়লা লাগতো। ছাত্রছাত্রীরা সাদা রঙ করে দেয়ালকে সুন্দর করছে’। আগাছা মুক্ত সমাজের পাশাপাশি আগাছা মুক্ত, অর্থাৎ দুনীর্তিমুক্ত দেশ চাই, সেটা আমরা বিভিন্ন চিত্রের মাধ্যমে দাবী জানাচ্ছি’।

ঢাকা কলেজের আবিদ তালুকদার বলেন’ টাঙ্গাইল শহরে রাজনীতির পোষ্টার, ভর্তি চলছে কিংবা বিভিন্ন দোকানের বিজ্ঞাপনে দেয়াল ময়লা ছিল। ময়লাযুক্ত শহরকে সুন্দর রঙের মাধ্যমে রাঙিয়ে দিতে আমাদের প্রচেষ্টা, আমরা চাই ময়লামুক্ত রাজনীতি’।

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাহাত খান ও সা’দত কলেজের দুর্জয় বলেন’ অপরিচ্ছন্ন শহরকে সুন্দর করতে এটা আমাদের চিকা মারা নয়, এটা আমাদের দেয়ালিকা। আমরা সুন্দর দেয়ালিকার মতো সুন্দর গনতান্ত্রিক দেশ চাই’।
শহরকে দেয়ালিকার রঙে রাঙিয়ে দিতে শহরের বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শতশত ছাত্রছাত্রীরা একযোগে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কাজ করছে। আর্ট শেখা বা করার অভিজ্ঞতা না থাকলেও তাদের দেয়ালে দেয়ালে রঙতুলির দেয়ালিকা সুন্দর লাগছে।

শহরের সাধারণ জনসাধারণ থেকে বৃদ্ধিজীবি, লেখক সাংবাদিক সবারই মনে রঙ ধরছে। সবাই দেয়ালের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় শিক্ষার্থীদের এই চিত্রকর্ম পযৃবেক্ষণ করছেন। কেউ কেউ শখ করে মোবাইলের স্থায়ী মেমোরীতে ছবি কিংবা ভিডিও করে রাখছেন। শিক্ষার্থীদের এই সুন্দর দেয়ালিকা সময়ের ব্যবধানে স্মৃতিময় হউক।

এম.কন্ঠ/ ১৩ অগাস্ট  /এম.টি

নিউজটি শেয়ার করুন

রঙতুলির আঁচড়ে টাঙ্গাইল শহর

প্রকাশ: ০৫:৫৬:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৪

রঙতুলির আঁচড়ে ঢেকে গেছে টাঙ্গাইল শহরের অপরিচ্ছন্ন দেয়াল। “স্বাধীন বাংলার স্বাধীন গান, রক্ত দিয়েছি, দিয়েছি প্রাণ, ৫২ তো ভুলি নাই, ২৪ কে ভুলবো কেন?, স্বপ্ন এখন দেশ ছাড়ার নয়, স্বপ্ন এখন দেশ গড়ার, ছাত্র শক্তির আন্দোলনে নতুন বাংলার জন্ম, পানি লাগবে পানি? মীর মগ্ধ, এবার স্বাধীনতা রক্ষা করার পালা, ৩৬ জুলাই, স্বাধীনতা এনেছি সংস্কারও আনবো, অরুণ পাতের তরুণ দল, গুজবে কান দিবেন না, এভাবেও শুরু করা যায়, শোনো মহাজন আমরা অনেক জন, আমাদের ভাগ্য আমাদেরই গড়ে নিতে হবে, পিন্ডির গোলামি ছিন্ন করতে হবে-মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, আমারে যাইতে দেন না! আমার ছোট বোন আছে, বাংলার বুকে বিজয়ের পতাকা উড়ুক চিরকাল, হাল ছেড়োনা বন্ধু বরং কন্ঠ ছাড়ো জোড়ে’ এ রকম বাক্য ছাড়াও আছে রঙতুলির আঁচড়ে বিভিন্ন যুদ্ধজয়ের চিত্র, ছাত্রজনতার ঐক্যবদ্ধতা, স্বৈরাচার থেকে ওজনে ভারী ছাত্রজনতার চিত্র, মুসলিম, হিন্দু,বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানের একত্রতা, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা, মগ্ধু পানি বিতরণ, ভাষা সৈনিকদের স্মৃতিস্থম্ভ শহীদ মিনার, টাঙ্গাইলের মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানী এবং বুক উঁচিয়ে দুই হাত ছাড়িয়ে পুলিশের গুলিকে তোক্কায়া না করা যুদ্ধ জয়ের চিত্র।

শহরের নিরালা মোড় থেকে শুরু হয়ে জেলা সদর সড়কের বটতলা পর্যন্ত দু’পাশের অপরিচ্ছন্ন দেয়াল এরকম রঙতুলির ছোঁয়ায় সৌন্দয্যে হারিয়ে যাওয়ার চিত্র। ছাত্র আন্দোলনে যুদ্ধ জয়ের পর ছাত্র জনতা শুরুতে শহরের সবচেয়ে বড় সমস্যা যানজট নিরসনে ট্রাফিক আইনের যথাযথ ব্যবহার কাজে লাগিয়ে যানজট দূর করার চেষ্টা করেছেন।

যুদ্ধ জয় করতে ইট পাটকেল ও লাঠি ব্যবহার করে শহরকে অপরিচ্ছন্ন করেছিলেন। যুদ্ধ জয়ের পর সেই শহরকে একদিনেই ঝাড়ু দিয়ে পরিস্কার করেছেন। এরপর শিক্ষাথীরা শুরু করছেন শহরের ময়লা ও অপরিচ্ছন্ন দেয়ালগুলো। শুরুটা ১০ আগষ্ট থেকে। শহরের ময়লা দেয়ালকে প্রথমে সাদা রঙ করে পরমুহুর্তে যুদ্ধজয়ের সময়কে স্মৃতিময় রাখতে দেয়ালে দেয়ালে দেয়ালিকা।

বিন্দুবাসিনী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর ছাত্রী আদ্রিকা তাবাসসুম তুবা ও সাবিহা ইসলাম তোয়া বলেন’ স্বৈরাচারী শাসনের সময় শহরের দেয়ালগুলি বিভিন্ন রাজনীতি দলের পোষ্টার কিংবা চিকা লেখায় ময়লা ছিলো। আমরা সেই ময়লাযুক্ত দেয়ালগুলি পরিস্কার করে দেয়ালের রঙে নতুন বাংলাদেশের রুপ তুলে ধরার চেষ্টা করছি’।

সৃষ্টি একাডেমীর অষ্টম শ্রেনীর ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসি মৌরি ও ফাইজা ইসলাম বলেন’ আমরা স্বাধীনতার কথা লেখছি, শহীদদের কথা লেখছি। পরের প্রজম্ম জানি জানতে পারে এ বিজয়ের কথা,। এ স্বৈরাচারী সরকারের পতনের কথা। আমরা রঙতুলির রঙে নতুন বাংলাদেশের টাঙ্গাইল শহরকে রাঙিয়ে তুলতে চাই’।

কুমুদিনী কলেজের ছাত্রী রাশিদা সুলতানা রোজী, সাদিয়া আক্তার তারা, তরী ও চৈতি রায় বলেন’ আমরা নতুন করে স্বৈরাচারী শাসনের পতন ঘটিয়ে দেশকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছি। আমরা নতুন বাংলাদেশের নতুন রুপ তুলে ধরার মাধ্যমে গণতান্দ্রিক দেশ কামনা করছি’।

সরকারী সা’দত কলেজের গনিত বিভাগের ছাত্র আব্দুস সাত্তার বলেন’ দেয়ালে লিখন এখন সুন্দর লাগছে, আগে বিভিন্ন রাজনীতিসহ অগোছালো লেখা ছিলো। যা দেখতে ময়লা লাগতো। ছাত্রছাত্রীরা সাদা রঙ করে দেয়ালকে সুন্দর করছে’। আগাছা মুক্ত সমাজের পাশাপাশি আগাছা মুক্ত, অর্থাৎ দুনীর্তিমুক্ত দেশ চাই, সেটা আমরা বিভিন্ন চিত্রের মাধ্যমে দাবী জানাচ্ছি’।

ঢাকা কলেজের আবিদ তালুকদার বলেন’ টাঙ্গাইল শহরে রাজনীতির পোষ্টার, ভর্তি চলছে কিংবা বিভিন্ন দোকানের বিজ্ঞাপনে দেয়াল ময়লা ছিল। ময়লাযুক্ত শহরকে সুন্দর রঙের মাধ্যমে রাঙিয়ে দিতে আমাদের প্রচেষ্টা, আমরা চাই ময়লামুক্ত রাজনীতি’।

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাহাত খান ও সা’দত কলেজের দুর্জয় বলেন’ অপরিচ্ছন্ন শহরকে সুন্দর করতে এটা আমাদের চিকা মারা নয়, এটা আমাদের দেয়ালিকা। আমরা সুন্দর দেয়ালিকার মতো সুন্দর গনতান্ত্রিক দেশ চাই’।
শহরকে দেয়ালিকার রঙে রাঙিয়ে দিতে শহরের বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শতশত ছাত্রছাত্রীরা একযোগে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কাজ করছে। আর্ট শেখা বা করার অভিজ্ঞতা না থাকলেও তাদের দেয়ালে দেয়ালে রঙতুলির দেয়ালিকা সুন্দর লাগছে।

শহরের সাধারণ জনসাধারণ থেকে বৃদ্ধিজীবি, লেখক সাংবাদিক সবারই মনে রঙ ধরছে। সবাই দেয়ালের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় শিক্ষার্থীদের এই চিত্রকর্ম পযৃবেক্ষণ করছেন। কেউ কেউ শখ করে মোবাইলের স্থায়ী মেমোরীতে ছবি কিংবা ভিডিও করে রাখছেন। শিক্ষার্থীদের এই সুন্দর দেয়ালিকা সময়ের ব্যবধানে স্মৃতিময় হউক।

এম.কন্ঠ/ ১৩ অগাস্ট  /এম.টি