ঢাকা ১০:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

টাঙ্গাইলে রফিকুল হত্যা মামলার সাড়ে ৩ বছর পর রহস্য উদঘাটন

নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশ: ১২:৩৩:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী নাথের পাড়া এলাকায় টাইলস মিস্ত্রি রফিকুল হত্যা মামলার সাড়ে ৩ বছর পর রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা। এ ঘটনায় তার ভগ্নিপতি মকবুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে টাঙ্গাইল পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন তালুকদার তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানান, ২০২২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ধনবাড়ীর নাথেরপাড়া গ্রামে জনৈক মামুন মিয়ার জমিতে টাইলস মিস্ত্রি রফিকুল ইসলামের রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ গিয়ে সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত এবং ময়না তদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে প্রেরণ করে। এ ঘটনা ৩ ফেব্রুয়ারি রফিকুল ইসলামের মা ছাহেরা বেওয়া (৫৮) বাদি হয়ে ধনাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

পুলিশ মামলার মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য ব্যাপক কার্যক্রম পরিচালনা করলেও মূল রহস্য উদঘাটিত না হওয়ায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে মাধ্যমে মামলাটি ওই বছরের ২৫ জুলাই পিবিআই টাঙ্গাইলের এর উপর মামলার তদন্তভার অর্পিত হয়।

পিবিআইয়ের চৌকস টিম প্রথাগত এবং প্রযুক্তিগত ভাবে মামলাটি তদন্ত করতে শুরু করেন। পিবিআই টিম তদন্তকালে জানতে পারেন রফিকুল কিছুটা উশ্রঙ্খল প্রকৃতির ছিল। সে কাউকে মান্য করতেন না এবং চুরির সাথেও যুক্ত ছিল। তাছাড়া সে তার মামার বাড়ীর মায়ের ওয়ারিশের সম্পত্তি কড়ায়গন্ডায় একাই বুঝিয়ে নেওয়ার জন্য চেষ্টা করলে তার মামা ও মামাতো ভাইদের সাথে চরম বিরোধের সৃষ্টি হয়।

অপর দিকে রফিকুল ইসলামের মামা রেহান আলীর বাড়ী হতে পর পর কয়েকবার গুরু চুরি হলে তারা রফিকুলকে সন্দেহ করে। এছাড়া রফিকুলের সাথে তার ভাই হাফিজুরের সাথেও জমি সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। তাছাড়া অত্র মামলার গ্রেফতারকৃত আসামী মকবুল (৫৫) রফিকুলের বোন জামাই। সে দীর্ঘদিন যাবৎ রফিকুলদের বাড়ীতে বসবাস করে আসছিল। রফিকুল বিষয়টি ভালো চোখে দেখতনা এবং অত্র মামলার ঘটনার কিছুদিন আগে সে মকবুলের ঘর ভেঙে দেয়। ফলে মকবুলের সাথেও রফিকুলের বিরোধের সৃষ্টি হয়।

তিনি আরও জানান, এসআই মো. আলমগীর কবিরের নেতৃত্বে একটি চৌকস টিম ঘটনার পর হতে পলাতক আসামী মকবুলের অবস্থান নির্নয়ের জন্য টাঙ্গাইলে ধনবাড়ীসহ বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান অব্যাহত রাখেন। অব্যাহত অভিযানের এক পর্যায়ে রোববার রাতে নাথের পাড়া এলাকা আসামী মকবুলকে (৫৫) গ্রেফতার করা হয়।

পিবিআই এর জিজ্ঞাসাবাদে বিভিন্ন কলা কৌশল প্রয়োগ করলে এক পর্যায়ে সে অত্র মামলার ঘটনার সাথে নিজেকে জড়িয়ে এবং অন্যান্য আসামীদের সম্পৃক্ত করে আদালতে ১৬৪ ধারা মতে দোষ স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদানের জন্য ইচ্ছা পোষন করে।

সোমবার তাকে আদালতে প্রেরণ করা হলে স্বেচ্ছায় সে আদালতে অত্র মামলার হত্যাকান্ডের ঘটনার সাথে নিজেকে জড়িয়ে এবং অন্যান্য আসামীদের সম্পৃক্ত করে আদালতে ১৬৪ ধারা মতে বিস্তারিত দোষ স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করেন।

এম.কন্ঠ/ ১৪ অক্টোবর  /এম. টি

নিউজটি শেয়ার করুন

টাঙ্গাইলে রফিকুল হত্যা মামলার সাড়ে ৩ বছর পর রহস্য উদঘাটন

প্রকাশ: ১২:৩৩:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী নাথের পাড়া এলাকায় টাইলস মিস্ত্রি রফিকুল হত্যা মামলার সাড়ে ৩ বছর পর রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা। এ ঘটনায় তার ভগ্নিপতি মকবুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে টাঙ্গাইল পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন তালুকদার তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানান, ২০২২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ধনবাড়ীর নাথেরপাড়া গ্রামে জনৈক মামুন মিয়ার জমিতে টাইলস মিস্ত্রি রফিকুল ইসলামের রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ গিয়ে সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত এবং ময়না তদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে প্রেরণ করে। এ ঘটনা ৩ ফেব্রুয়ারি রফিকুল ইসলামের মা ছাহেরা বেওয়া (৫৮) বাদি হয়ে ধনাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

পুলিশ মামলার মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য ব্যাপক কার্যক্রম পরিচালনা করলেও মূল রহস্য উদঘাটিত না হওয়ায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে মাধ্যমে মামলাটি ওই বছরের ২৫ জুলাই পিবিআই টাঙ্গাইলের এর উপর মামলার তদন্তভার অর্পিত হয়।

পিবিআইয়ের চৌকস টিম প্রথাগত এবং প্রযুক্তিগত ভাবে মামলাটি তদন্ত করতে শুরু করেন। পিবিআই টিম তদন্তকালে জানতে পারেন রফিকুল কিছুটা উশ্রঙ্খল প্রকৃতির ছিল। সে কাউকে মান্য করতেন না এবং চুরির সাথেও যুক্ত ছিল। তাছাড়া সে তার মামার বাড়ীর মায়ের ওয়ারিশের সম্পত্তি কড়ায়গন্ডায় একাই বুঝিয়ে নেওয়ার জন্য চেষ্টা করলে তার মামা ও মামাতো ভাইদের সাথে চরম বিরোধের সৃষ্টি হয়।

অপর দিকে রফিকুল ইসলামের মামা রেহান আলীর বাড়ী হতে পর পর কয়েকবার গুরু চুরি হলে তারা রফিকুলকে সন্দেহ করে। এছাড়া রফিকুলের সাথে তার ভাই হাফিজুরের সাথেও জমি সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। তাছাড়া অত্র মামলার গ্রেফতারকৃত আসামী মকবুল (৫৫) রফিকুলের বোন জামাই। সে দীর্ঘদিন যাবৎ রফিকুলদের বাড়ীতে বসবাস করে আসছিল। রফিকুল বিষয়টি ভালো চোখে দেখতনা এবং অত্র মামলার ঘটনার কিছুদিন আগে সে মকবুলের ঘর ভেঙে দেয়। ফলে মকবুলের সাথেও রফিকুলের বিরোধের সৃষ্টি হয়।

তিনি আরও জানান, এসআই মো. আলমগীর কবিরের নেতৃত্বে একটি চৌকস টিম ঘটনার পর হতে পলাতক আসামী মকবুলের অবস্থান নির্নয়ের জন্য টাঙ্গাইলে ধনবাড়ীসহ বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান অব্যাহত রাখেন। অব্যাহত অভিযানের এক পর্যায়ে রোববার রাতে নাথের পাড়া এলাকা আসামী মকবুলকে (৫৫) গ্রেফতার করা হয়।

পিবিআই এর জিজ্ঞাসাবাদে বিভিন্ন কলা কৌশল প্রয়োগ করলে এক পর্যায়ে সে অত্র মামলার ঘটনার সাথে নিজেকে জড়িয়ে এবং অন্যান্য আসামীদের সম্পৃক্ত করে আদালতে ১৬৪ ধারা মতে দোষ স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদানের জন্য ইচ্ছা পোষন করে।

সোমবার তাকে আদালতে প্রেরণ করা হলে স্বেচ্ছায় সে আদালতে অত্র মামলার হত্যাকান্ডের ঘটনার সাথে নিজেকে জড়িয়ে এবং অন্যান্য আসামীদের সম্পৃক্ত করে আদালতে ১৬৪ ধারা মতে বিস্তারিত দোষ স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করেন।

এম.কন্ঠ/ ১৪ অক্টোবর  /এম. টি