টাঙ্গাইলে পেট্রোল অকটেনের পরিবর্তে বাইক চলছে এলপিজিতে
টাঙ্গাইলে ‘বাইক এলপিজি বাংলাদেশের ‘ইনোভেশন শোকেসিং’ সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মো. সফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার সময় টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রথমে আমার ব্যবহৃত বাইকটিতে অগ্নি নির্বাপন যন্ত্রের সিলিন্ডার এবং মোটর গাড়ি এলপিজি কনভার্সনের যন্ত্রপাতি দিয়ে ২০২১ সালের শুরুর দিকে তুর্কির একটি কীট এবং আনসুজিক যন্ত্রপাতি দিয়ে কনভার্সন করি। কিন্তু সফল হতে পারিনি। পরবর্তীতে ২০২৩ এর শুরুর দিকে দেশের বাইরে গিয়ে এ বিষয়ের উপর ট্রেনিং করি। দেশে আসার পর পুনরায় চেষ্টা করি এবং সফল হই।
প্রাথমিক সফলতার পর আমার বাইকটি দীর্ঘদিন চালাতে থাকি এবং এর ভাল মন্দ দিকগুলো পর্যালোচনা করি। লক্ষ্য করি পেট্রলের মতই চলে এবং এতে ইঞ্জিনের তেমন কোন ক্ষতি হয় না। ২০২৩ এর শেষের দিকে সকল পর্যালোচনার পর ইন্ডিয়া থেকে কিছু সিলিন্ডার, বেশ কিছু ব্রান্ডের কাঁট এবং কনভার্সন যন্ত্রপাতি নিয়ে আসি। এ গুলোর মধ্যে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার। এই সিলিন্ডারের নিরাপত্তার কথা ভেবে ইন্ডিয়া থেকে আমদানিকৃত সিলিন্ডারটি আমি রাজশাহী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হতে ২৫ (বার) বা ১০০০ পিএসআই সহনীয় প্রেশারে পরীক্ষা করে নিয়ে আনি। যেন এটি বিস্ফোরনের কোন সম্ভাবনা না থাকে। কীটের পারফরমেন্স ভাল না থাকার কারণে একাধিক কীট নিয়ে গবেষণা করি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ৭০ লক্ষের মত বাইক রয়েছে। এছাড়াও প্রতি বছর প্রায় ৫ লক্ষ করে নতুন বাইক বিক্রয় হচ্ছে। এতে প্রায় গড়ে প্রতিদিন ৫০ লক্ষ লিটার পেট্রল বা অকটেন জ্বালানী হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আনুমানিক হিসেব করলে এলপিজি গ্যাসে বাইক চললে প্রতি বছর সরকারের প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশ সরকারের কাছে বিনীত আবেদন জানাবো- এ বিষয়ের উপর যারা বিশেষজ্ঞ আছেন, তাদের সমন্বয়ে একটি উচ্চ যাচাই বাছাই কমিটি গঠন করে কিভাবে এই প্রযুক্তিকে আরও নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী করে বৈদেশিক মুদ্রার অবচয় কমানো যায়। জ্বালালি গ্যাস প্রোপেন বা বিউটেন এর মিশ্রণকে নির্দেশ করা হয়। যেখানে প্রোপেন এর পরিমাণ থাকে ৩০%-৪০% এবং বিউটেন এর পরিমাণ থাকে ৬০%-৭০%। শীত প্রধান দেশে প্রোপেনের মিশ্রন বেশী থাকে।
অন্যদিকে প্রাকৃতিক বা সিএনজি গ্যাস বায়বীয় হওয়ায় তা উপরের দিকে ধাবিত হয় এবং বিস্ফোরনের ভয় বেশি থাকে। এলপিজি গ্যাসে সর্বোচ্চ চাপ থাকে ১৫ (বার) বা ২৫০ পিএসআই অন্যদিকে সিএনজি পাসের চাপ থাকে ৪৫০০ পিএসআই। তাই এলপিজি বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত এলপিজিকে জীবাশ্ম জ্বালানি হতে উৎপাদন করা হবে।
এলপিজিতে কনভার্সন করলে অকটেন বা পেট্রলের মতই মাইলেজ পাবে। এক্ষেত্রে সুবিধা হলো এক লিটার এলপিজি সাধারণত ৫০- ৬০ টাকার মধ্যেই মূল্য থাকে। অন্যদিকে এক লিটার পেট্রোল বা অকটেন ১২৫-১৩০ টাকা। তুলনা করলে এক লিটার পেট্রল বা অকটেনের টাকা দিয়ে ২ লিটার এলপিজি পাওয়া যায় ফলে মাইলেজ ও দ্বিগুন হয়ে যায়।
সফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৯০০ এর অধিক পাম্প চালু রয়েছে। যা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল গুলোতে রয়েছে ফলে যে কোন বাইকার তার বাইকে যে কোন এলপিজি পাম্প থেকে গ্যাস রিফিল করতে পারবে। এছাড়াও আমাদের কাছে একটি রেগুলেটর রয়েছে যা দিয়ে বাসা- বাড়িতে ব্যবহৃত এলপিজি সিলিন্ডার থেকেও গ্যাস রিফিল করে বাইক চালাতে পারেব।
এম.কন্ঠ/ ৩১ অক্টোবর /এম.টি