ঢাকা ০২:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কালিহাতীতে সমাজসেবা কর্মকর্তা হান্নানের বিরুদ্ধে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ

কালিহাতী প্রতিনিধি :
প্রকাশ: ০৬:০৩:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৪

টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে তিনটি এতিমখানার ক্যাপিটেশন গ্রান্টের (মাথাপিছু অনুদান) বরাদ্দ থেকে ছয় লাখ ষাট হাজার টাকা ঘুষ গ্রহনের অভিযোগ ওঠেছে কালিহাতী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা (বর্তমানে ঘাটাইলে কর্মরত) মো. আব্দুল হান্নান সরকারের বিরুদ্ধে। এ কাজে সহায়তার অভিযোগ রয়েছে একটি এতিমখানার প্রতিষ্ঠাতা ও দুটি এতিমখানার মুহতামিমের (সুপার) বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্ট এক এতিমখানার সভাপতি ও দুই মুহতামিম।

অভিযোগসূত্রে জানা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকারি নিবন্ধনপ্রাপ্ত দেউপুর মোস্তাফিয়্যাহ, দারুল উলুম মোস্তফা (সা.) ও রাজাফৈর আবু আশরাফ খান এতিমখানার ১৪৬ জন এতিমের জনপ্রতি মাসিক দুই হাজার টাকা হারে জুলাই-ডিসেম্বর/২৩ পর্যন্ত ১ম কিস্তির ১৭ লাখ ৫২ হাজার টাকা ক্যাপিটেশন গ্রান্ট (মাথাপিছু অনুদান) বরাদ্দ হয়। বিলে নানা ভুল-ত্রুটি ধরে বিল পাসে বিলম্ব ঘটায় সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান। উপজেলা সদরের কালিহাতী ইসলামিয়া এতিমখানার মুহতামিম মো. মাহবুবুর রহমান অভিযোগকারীদের জানান বিল ছাড়ের বিষয়ে সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল হান্নানের সাথে আলোচনা হয়েছে যে, বরাদ্দপ্রাপ্ত ১ম কিস্তির টাকা থেকে এক লাখ করে মোট তিন লক্ষ টাকা কর্মকর্তা আব্দুল হান্নানকে দিলে বিল পাস হবে অন্যথায় বিল পাস হবে না। পরবর্তীতে পরিচালনা কমিটির সাথে আলোচনা করে তিন লক্ষ টাকা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয় এতিমখানাগুলো। চেক পাওয়ার পর দেউপুর মোস্তাফিয়্যাহ ও দারুল উলুম মোস্তফা (সা.) এতিমখানার টাকা কালিহাতী ইসলামিয়া এতিমখানার অফিসকক্ষে ধলাটেঙ্গর এতিমখানার প্রতিষ্ঠাতা মো. মহর আলী মারফত সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল হান্নানকে দেওয়ার জন্য প্রদান করেন। রাজাফৈর আবু আশরাফ খান এতিমখানার টাকা মো. মহর আলী ও পৌজান ইয়াছিনিয়া এতিমখানার মুহতামিম মাওলানা মো. মনির হোসেন মারফত আব্দুল হান্নানকে দেওয়ার জন্য প্রদান করেন। একইভাবে জানু-জুন/২৪ পর্যন্ত ২য় কিস্তির ১৭ লাখ ৫২ হাজার টাকা ক্যাপিটেশন গ্রান্ট (মাথাপিছু অনুদান) ছাড়ে এক লাখ বিশ হাজার টাকা করে ৩ লাখ ষাট হাজার টাকা দাবি করে। বিল ছাড়ে এই টাকা জমাকৃত ফান্ড থেকে দেউপুর মোস্তাফিয়্যাহ ও দারুল উলুম মোস্তফা (সা.) এতিমখানা অগ্রিম প্রদান করার পর বিল পাশ করা হয়। রাজাফৈর আবু আশরাফ খান এতিমখানার টাকা কালিহাতী এতিমখানার মুহতামিম (সুপার) মাওলানা মো. মাহবুবুর রহমানের নিকট প্রদানের পর বিল পাশ করা হয়।

এ বিষয়ে ধলাটেঙ্গর এতিমখানার প্রতিষ্ঠাতা মো. মহর আলী বলেন, অভিযোগকারীদের কারো সাথে পরিচয় নেই এবং কোনও প্রকার লেনদেন করা হয়নি।

এ বিষয়ে পৌজান ইয়াছিনিয়া এতিমখানার মুহতামিম মাওলানা মো. মনির হোসেনের মুঠোফোনে (০১৭২৬-৪৭২১২১) বার বার চেষ্টা করেও সংযোগ স্থাপন করা যায় নি।

অভিযোগের বিষয়ে আলাপকালে কালিহাতী ইসলামিয়া এতিমখানার মুহতামিম মো. মাহবুবুর রহমান জানান, বিল ছাড়ে কোনও টাকা কাউকে প্রদান করতে হয়নি মর্মে উপজেলার সকল এতিমখানা প্রধানদের স্বাক্ষরিত একটি প্রত্যয়ন রয়েছে। দারুল উলুম মোস্তফা (সা.) এতিমখানা এতিমখানার ব্যাংক হিসাব থেকে এক লাখ বিশ হাজার টাকা উত্তোলনের বিষয়ে বলেন, ধারের টাকা পরিশোধে ওই চেক দিয়েছিলেন তারা।

অভিযুক্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুল হান্নান সরকার এ বিষয়ে মুঠোফোনে বলেন, এ বিষয়ে কিছু জানি না, কিছু বলতে পারবো না। কালিহাতী ইসলামিয়া এতিমখানার সুপারকে চিনি না, তার সাথে পরিচয় নেই। এক প্রশ্নের উত্তরে উত্তেজিত হয়ে কোনও বাবদ টাকা নেননি বলে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন।

 

এম.কন্ঠ/ ২৫ অগাস্ট  /এম.টি

নিউজটি শেয়ার করুন

কালিহাতীতে সমাজসেবা কর্মকর্তা হান্নানের বিরুদ্ধে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ

প্রকাশ: ০৬:০৩:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৪

টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে তিনটি এতিমখানার ক্যাপিটেশন গ্রান্টের (মাথাপিছু অনুদান) বরাদ্দ থেকে ছয় লাখ ষাট হাজার টাকা ঘুষ গ্রহনের অভিযোগ ওঠেছে কালিহাতী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা (বর্তমানে ঘাটাইলে কর্মরত) মো. আব্দুল হান্নান সরকারের বিরুদ্ধে। এ কাজে সহায়তার অভিযোগ রয়েছে একটি এতিমখানার প্রতিষ্ঠাতা ও দুটি এতিমখানার মুহতামিমের (সুপার) বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্ট এক এতিমখানার সভাপতি ও দুই মুহতামিম।

অভিযোগসূত্রে জানা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকারি নিবন্ধনপ্রাপ্ত দেউপুর মোস্তাফিয়্যাহ, দারুল উলুম মোস্তফা (সা.) ও রাজাফৈর আবু আশরাফ খান এতিমখানার ১৪৬ জন এতিমের জনপ্রতি মাসিক দুই হাজার টাকা হারে জুলাই-ডিসেম্বর/২৩ পর্যন্ত ১ম কিস্তির ১৭ লাখ ৫২ হাজার টাকা ক্যাপিটেশন গ্রান্ট (মাথাপিছু অনুদান) বরাদ্দ হয়। বিলে নানা ভুল-ত্রুটি ধরে বিল পাসে বিলম্ব ঘটায় সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান। উপজেলা সদরের কালিহাতী ইসলামিয়া এতিমখানার মুহতামিম মো. মাহবুবুর রহমান অভিযোগকারীদের জানান বিল ছাড়ের বিষয়ে সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল হান্নানের সাথে আলোচনা হয়েছে যে, বরাদ্দপ্রাপ্ত ১ম কিস্তির টাকা থেকে এক লাখ করে মোট তিন লক্ষ টাকা কর্মকর্তা আব্দুল হান্নানকে দিলে বিল পাস হবে অন্যথায় বিল পাস হবে না। পরবর্তীতে পরিচালনা কমিটির সাথে আলোচনা করে তিন লক্ষ টাকা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয় এতিমখানাগুলো। চেক পাওয়ার পর দেউপুর মোস্তাফিয়্যাহ ও দারুল উলুম মোস্তফা (সা.) এতিমখানার টাকা কালিহাতী ইসলামিয়া এতিমখানার অফিসকক্ষে ধলাটেঙ্গর এতিমখানার প্রতিষ্ঠাতা মো. মহর আলী মারফত সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল হান্নানকে দেওয়ার জন্য প্রদান করেন। রাজাফৈর আবু আশরাফ খান এতিমখানার টাকা মো. মহর আলী ও পৌজান ইয়াছিনিয়া এতিমখানার মুহতামিম মাওলানা মো. মনির হোসেন মারফত আব্দুল হান্নানকে দেওয়ার জন্য প্রদান করেন। একইভাবে জানু-জুন/২৪ পর্যন্ত ২য় কিস্তির ১৭ লাখ ৫২ হাজার টাকা ক্যাপিটেশন গ্রান্ট (মাথাপিছু অনুদান) ছাড়ে এক লাখ বিশ হাজার টাকা করে ৩ লাখ ষাট হাজার টাকা দাবি করে। বিল ছাড়ে এই টাকা জমাকৃত ফান্ড থেকে দেউপুর মোস্তাফিয়্যাহ ও দারুল উলুম মোস্তফা (সা.) এতিমখানা অগ্রিম প্রদান করার পর বিল পাশ করা হয়। রাজাফৈর আবু আশরাফ খান এতিমখানার টাকা কালিহাতী এতিমখানার মুহতামিম (সুপার) মাওলানা মো. মাহবুবুর রহমানের নিকট প্রদানের পর বিল পাশ করা হয়।

এ বিষয়ে ধলাটেঙ্গর এতিমখানার প্রতিষ্ঠাতা মো. মহর আলী বলেন, অভিযোগকারীদের কারো সাথে পরিচয় নেই এবং কোনও প্রকার লেনদেন করা হয়নি।

এ বিষয়ে পৌজান ইয়াছিনিয়া এতিমখানার মুহতামিম মাওলানা মো. মনির হোসেনের মুঠোফোনে (০১৭২৬-৪৭২১২১) বার বার চেষ্টা করেও সংযোগ স্থাপন করা যায় নি।

অভিযোগের বিষয়ে আলাপকালে কালিহাতী ইসলামিয়া এতিমখানার মুহতামিম মো. মাহবুবুর রহমান জানান, বিল ছাড়ে কোনও টাকা কাউকে প্রদান করতে হয়নি মর্মে উপজেলার সকল এতিমখানা প্রধানদের স্বাক্ষরিত একটি প্রত্যয়ন রয়েছে। দারুল উলুম মোস্তফা (সা.) এতিমখানা এতিমখানার ব্যাংক হিসাব থেকে এক লাখ বিশ হাজার টাকা উত্তোলনের বিষয়ে বলেন, ধারের টাকা পরিশোধে ওই চেক দিয়েছিলেন তারা।

অভিযুক্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুল হান্নান সরকার এ বিষয়ে মুঠোফোনে বলেন, এ বিষয়ে কিছু জানি না, কিছু বলতে পারবো না। কালিহাতী ইসলামিয়া এতিমখানার সুপারকে চিনি না, তার সাথে পরিচয় নেই। এক প্রশ্নের উত্তরে উত্তেজিত হয়ে কোনও বাবদ টাকা নেননি বলে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন।

 

এম.কন্ঠ/ ২৫ অগাস্ট  /এম.টি