হত্যায় আরো কেউ জড়িত থাকতে পারে-বাদি
ভূঞাপুরে সাংবাদিকের মা হত্যার মামলার তদন্ত ৫ মাসেও শেষ হয়নি
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে সাংবাদিকের মা সুলতানা সুরাইয়াকে (৬৫) হত্যার ঘটনায় দুই জনকে গ্রেপ্তারর করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তবে পাঁচ মাসেও এ মামলার তদন্ত শেষ করতে পারেনি তদন্তকারী কর্মকর্তা। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিহতের স্বজনরা। তাদের দাবি, দ্রুত সময়ের মধ্যে হত্যাকান্ডের মুল রহস্য উম্মোচনসহ মামলাটির তদন্ত শেষ করে আসামীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
সুলতানা সুরাইয়া পশ্চিম ভূঞাপুর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তার ছেলে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকার বার্তা সম্পাদক আবু সায়েম আকন্দ।
আবু সায়েম আকন্দ বলেন, দুই জন গ্রেপ্তার পর মামলাটি আর গতি পায়নি। পুলিশের কার্যক্রমও সন্তোষজনক নয়। তদন্ত কর্মকর্তার অবহেলায় পাঁচ মাসেও আমার মায়ের হত্যার তদন্ত শেষ হয়নি। আমার মাকে হত্যার পেছনে কেউ জড়িত রয়েছে। তাকে বের করে গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে সিরাজগঞ্জের সায়দাবাদ পুনর্বাসন এলাকার শাহজাহানের ছেলে মো. লাবু (২৯) এবং টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার পশ্চিম ভূঞাপুর এলাকার সিরাজ আকন্দের ছেলে আল আমিন আকন্দকে (২২) গ্রেপ্তার করে পিবিআই।
পুলিশ জানায়, গত ১৩ সেপ্টেম্বর রাত ১২টার দিকে সুলতানা বাথরুমে যান। এ সময় গ্রেফতারকৃতরা ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে। সুলতানা তাদেরকে চিনে ফেলেন। পরে সুলতানা চিৎকার করে আশপাশের লোক জড়ো করার চেষ্টা করেন। গ্রেফতারকৃত দুইজন সুলতানার গলায় গামছা ও সুতা পেঁচিয়ে ধারালো চাকু দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। হত্যার পর তারা ১২ হাজার টাকা ও দুটি মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায়।
পুলিশ আরও জানায়, গত ১৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বাড়িতে গিয়ে ঘরের লাইট জ্বালানো ও ফ্যানের শব্দে সন্দেহ হওয়ায় গেট টপকে ঘরে উঁকি দেয়। এ সময় ঘরের মেঝেতে সুলতানার গলাকাটা রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পায়। পুলিশের দাবি, চোরকে চিনে ফেলায় সুলতানা সুরাইয়াকে হত্যা করা হয়। গত ১৫ সেপ্টেম্বও আবু সায়েম আকন্দ বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। গত ১৭ সেপ্টেম্বর পিবিআই এ মামলাটি তদন্তভার গ্রহণ করে। পরে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে এ হত্যা মামলায় জড়িত দুই জনকে সিরাজগঞ্জ ও ভূঞাপুর উপজেলা থেকে গ্রেফতার করে। হত্যায় ব্যবহৃত চুরি উদ্ধার করা হয়।
পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার সিরাজ আমীন জানান, সুলতানা সুরাইয়া ওই বাড়িতে একাই থাকতেন। সুলতানা অবসর সময়ে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে তার সন্তান ও আত্মীয় স্বজনের সাথে যোগাযোগ রাখতেন। সুলতানার স্বামী বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য মারা যাওয়ার পর সুলতানা মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পেতেন। গ্রেফতারকৃত আল আমিন সুলতানার আত্মীয়। সে হিসেবে সুলতানা কোথায় টাকা রাখতেন তা আল আমিন জানতেন। তিনি মাঝে মধ্যে সুলতানার কাজ করে দিতেন। ঘটনার দিন তারা বাড়ির গ্রিল বেয়ে টিনের বেড়ার ভিতর দিয়ে প্রবেশ করে এবং লুকিয়ে থাকে। চুরি করা দেখে ফেলায় সুরাইয়াকে হত্যা করা হয়।
পিবিআইয়ের তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মো. মোস্তাফিজুর রহমান আনছারী বলেন, তদন্ত শেষ করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়া হবে। কতদিন লাগবে সেটা বলা যাবে না। আগামীকালও শেষ হতে পারে আবার এক বছরও লাগতে পারে।
এম.কন্ঠ/০৭ মার্চ/এম.টি