ঢাকা ০৮:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ
ঘাটাইলে লাল মাটি কাটার অপরাধে দুইজনকে ২লাখ টাকা অর্থদন্ড টাঙ্গাইলে শ্রমিকদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেছে ফরহাদ ইকবাল টাঙ্গাইলে ফরহাদ ইকবালের পক্ষ থেকে শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ টাঙ্গাইলে শ্বশুড়বাড়ীতে নাটোরের ট্রাক চালক আলমকে হত্যার অভিযোগ দেলদুয়ারে আটিয়া ইউনিয়ন আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নবীন বরণ, মিলাদ ও ক্রীড়া অনুষ্ঠিত টাঙ্গাইল শহরে চুরি ছিনতাই রোধে পুলিশি চেকপোস্ট টাঙ্গাইলে ফুটবল ফেস্টিভ্যাল টাঙ্গাইলে শীতার্তদের মাঝে বিএনপির প্রচার সম্পাদক টুকুর পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ কালিহাতীতে এলজিইডি’র প্রকল্পে নারী শ্রমিক নিয়োগে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ টাঙ্গাইলে শীতার্তদের মাঝে যুবদলের শীতবস্ত্র বিতরণ

১৭ বছর কারাভোগের পর খালাস সালাম পিন্টু, বরণের অপেক্ষায় টাঙ্গাইলবাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশ: ০২:১৮:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৪

বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক উপমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টু ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় খালাস পাওয়ায় টাঙ্গাইলের বিএনপির নেতাকর্মীরা পূর্বের অন্তঃকোন্দল ভুলে গিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন।

টানা ১৭ বছর কারাভোগের পর রোববার সালাম পিন্টুর খালাস পাওয়ার খবরটি ছড়িয়ে পড়লে তাৎক্ষনিক শহরে মিষ্টি বিতরণ ও আনন্দ মিছিল করে জেলা বিএনপি ও সহযোগিত অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এ সময় নেতাকর্মীদের পূর্বের অন্তঃকোন্দল ভুলে গিয়ে কাঁধে কাঁধ ও হাত হাতে রেখে আনন্দ মিছিলে অংশ নিতে দেখা যায়। আগামীতে যে দলের স্বার্থে যে কোন নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রস্তুত তারা। তাকে বরণের অপেক্ষায় রয়েছে টাঙ্গাইলবাসী।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে টাঙ্গাইলে রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিকসহ নানাভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক উপমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টু। ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় গ্রেফতরের পর থেকে কারাগারেই ছিলেন। গ্রেনেড হামলা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন তিনি।

তার অপর ভাই ছাত্রদল ও যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি এবং বর্তমানে বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু একাধিকবার কারাভোগ করেছেন। এছাড়াও অপর ভাই শামছুল আলম টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে মামলা ও হামলা শিকার হয়েছেন একাধিকবার। নির্বাচনী এলাকায় তার বাসা ও সম্পত্তিতে তান্ডব চালানোর অভিযোগ রয়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

এছাড়াও গ্রেনেড হামলা মামলায় আসামী হওয়ায় রাজনৈতিক অঙ্গনে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে জেলা আওয়ামী লীগ। গ্রেপ্তারের পর থেকে আব্দুস সালাম পিন্টু মুক্তি পরিষদ গঠন করে জেলা, শহর, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি গঠন করে ব্যাপক জনমত সৃষ্টি করে।

সালাম পিন্টু মুক্তি পরিষদের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট শাহজাহান কবির জানান, কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর সালাম পিন্টু টাঙ্গাইলে আসার সময় মহাসড়কের প্রবেশ পথ থেকে জেলা শহর ও তার নিজ নির্বাচনী এলাকায় ভূঞাপুর গোপালপুরে বড় ধরনের উষ্ণ সংবর্ধনার প্রস্তুতি চলছে।

আব্দুস সালাম পিন্টু টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৯১ ও ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে বিএনপি জামায়াত সরকার জোট সরকার গঠনের পর তিনি শিক্ষা উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০১৯ সালে ১৬ মে আব্দুস সালাম পিন্টুর বিরুদ্ধে টাঙ্গাইলের আদালতে গরু চুরিসহ লুটপাটের মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।

অভিযোগে ২০০১ সালের ১ অক্টোবর অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন ভূঞাপুর উপজেলার ভদ্রশিমুল গ্রামের এক আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর, চুরি ও মারপিটের অভিযোগ আনা হয় পিন্টুসহ ১১জনের বিরুদ্ধে। এ মামলার বাদি ছিলেন ভূঞাপুরের গাবসারা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ভূইয়া।

এভাবে অসংখ্য মামলা দিয়ে হয়রানি, রাজনৈতিক ও পারিবারিকভাবে হেনস্থাসহ নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টু। আবদুস সালাম পিন্টু টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলাধীন যমুনা বিধোত গুলিপেচা গ্রামের ডা. মরহুম মহিউদ্দিন মিয়ার জ্যৈষ্ঠ সন্তান। ডা. মহিউদ্দিন এলাকায় মহু ডাক্তার নামে পরিচিত ছিলেন।

৭১-এ মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি কাদেরিয়া বাহিনীর আঙ্গুর কোম্পানী, হাকিম কোম্পানী, ভোলা কোম্পানী ও আরজু কোম্পানীর সকল সদস্যকে বিনামূল্যে চিকিৎসা দিয়েছেন। সিরাজকান্দির চরে যমুনা নদীতে পাক বাহিনীর ভারী যুদ্ধাস্ত্র বহনকারী একটি জাহাজ মুক্তিবাহিনী ডুবিয়ে দেয়। সে সময়ে এটি ছিল আলোড়ন সৃষ্টিকারী এক যুগান্তকারী ঘটনা। সে সময় এই ঘটনা দেশে বিদেশে আলোচনার ঝড় তোলে।

রাতারাতি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে কাদের সিদ্দিকীকে বাঘা সিদ্দিকী উপাধি দিয়ে সংবাদ প্রচার করা হয়। এই খবরে গোটা দেশবাসী উৎফুল্ল হয়ে উঠে। মুক্তিযোদ্ধাদের মতে, ভারী সমরাস্ত্র বোঝাই ওই জাহাজটি উত্তরবঙ্গ সীমান্তে পৌঁছতে পারলে মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ অনেকটা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়তো। জাহাজ ডুবিয়ে দেয়ার সাথে জড়িত মুক্তিযোদ্ধারাও এসে মহু ডাক্তারের বাড়ীতে আশ্রয় নেয়। তাদের মধ্যে কয়েকজন ছিল টাইফয়েড আক্রান্ত। মহু ডাক্তার তাদের সবাইকে বিনামূল্যে চিকিৎসা করেন। মহু ডাক্তারের বড় ছেলে আবদুস সালাম পিন্টু। ‘৭১ সালে পাক-বাহিনী যেদিন প্রথম ঢাকা থেকে টাঙ্গাইল মার্চ করে নাটিয়াপাড়া ব্রীজে সালাম পিন্টুর নেতৃত্বে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়।

সেখানে বেশ কিছু সময় যুদ্ধ চলার পর পাক-বাহিনীর ভারী অস্ত্রেশস্ত্রের আক্রমণে টিকতে না পেরে প্রতিরোধকারীরা প্রতিরোধ তুলে নিতে বাধ্য হন।পরে সালাম পিন্টু বাড়ী ফিরে যাবার সময় পাকুটিয়া এলাকায় দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। তাকে বহনকারী গাড়ী পুকুরে পড়ে যায়। এতে গুরুত্বর আহত হয়ে দীর্ঘদিন তিনি বাড়ীতে থেকে চিকিৎসা নেন।স্বাধীনতার পরে তিনি ওকালতি পাস করে টাঙ্গাইলে আয়কর আইনজীবী হিসাবে প্রাকটিস শুরু করেন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বিএনপি গঠন করলে তিনি টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। সেই থেকে তিনি বিএনপিতেই আছেন।

তিনি টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূইয়াপুর) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন একাধিকবার। বর্তমানে তিনি শেখ হাসিনার সমাবেশে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে দায়েরকৃত গ্রেনেড হামলা মামলার আসামী হিসাবে কারাগারে আছেন। তার ছোট ভাই আবদসু সেলিম ৭১-এ ভারতে ট্রেনিং নিয়ে প্রথমে টাঙ্গাইলে আসেন। তাদের দলটিই টাঙ্গাইলে প্রথম মুক্তিবাহিনীর আগমন। ছোট ভাই আবুল কালাম আজাদ, মুক্তি বাহিনীর হাতেম কোম্পানীর অধীনে প্লাটুন কমান্ডার আ. হাইয়ের অধীনে যুদ্ধ করেছেন।

 

এম.কন্ঠ/ ০২ ডিসেম্বর /এম.টি

নিউজটি শেয়ার করুন

১৭ বছর কারাভোগের পর খালাস সালাম পিন্টু, বরণের অপেক্ষায় টাঙ্গাইলবাসী

প্রকাশ: ০২:১৮:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৪

বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক উপমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টু ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় খালাস পাওয়ায় টাঙ্গাইলের বিএনপির নেতাকর্মীরা পূর্বের অন্তঃকোন্দল ভুলে গিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন।

টানা ১৭ বছর কারাভোগের পর রোববার সালাম পিন্টুর খালাস পাওয়ার খবরটি ছড়িয়ে পড়লে তাৎক্ষনিক শহরে মিষ্টি বিতরণ ও আনন্দ মিছিল করে জেলা বিএনপি ও সহযোগিত অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এ সময় নেতাকর্মীদের পূর্বের অন্তঃকোন্দল ভুলে গিয়ে কাঁধে কাঁধ ও হাত হাতে রেখে আনন্দ মিছিলে অংশ নিতে দেখা যায়। আগামীতে যে দলের স্বার্থে যে কোন নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রস্তুত তারা। তাকে বরণের অপেক্ষায় রয়েছে টাঙ্গাইলবাসী।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে টাঙ্গাইলে রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিকসহ নানাভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক উপমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টু। ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় গ্রেফতরের পর থেকে কারাগারেই ছিলেন। গ্রেনেড হামলা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন তিনি।

তার অপর ভাই ছাত্রদল ও যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি এবং বর্তমানে বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু একাধিকবার কারাভোগ করেছেন। এছাড়াও অপর ভাই শামছুল আলম টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে মামলা ও হামলা শিকার হয়েছেন একাধিকবার। নির্বাচনী এলাকায় তার বাসা ও সম্পত্তিতে তান্ডব চালানোর অভিযোগ রয়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

এছাড়াও গ্রেনেড হামলা মামলায় আসামী হওয়ায় রাজনৈতিক অঙ্গনে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে জেলা আওয়ামী লীগ। গ্রেপ্তারের পর থেকে আব্দুস সালাম পিন্টু মুক্তি পরিষদ গঠন করে জেলা, শহর, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি গঠন করে ব্যাপক জনমত সৃষ্টি করে।

সালাম পিন্টু মুক্তি পরিষদের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট শাহজাহান কবির জানান, কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর সালাম পিন্টু টাঙ্গাইলে আসার সময় মহাসড়কের প্রবেশ পথ থেকে জেলা শহর ও তার নিজ নির্বাচনী এলাকায় ভূঞাপুর গোপালপুরে বড় ধরনের উষ্ণ সংবর্ধনার প্রস্তুতি চলছে।

আব্দুস সালাম পিন্টু টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৯১ ও ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে বিএনপি জামায়াত সরকার জোট সরকার গঠনের পর তিনি শিক্ষা উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০১৯ সালে ১৬ মে আব্দুস সালাম পিন্টুর বিরুদ্ধে টাঙ্গাইলের আদালতে গরু চুরিসহ লুটপাটের মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।

অভিযোগে ২০০১ সালের ১ অক্টোবর অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন ভূঞাপুর উপজেলার ভদ্রশিমুল গ্রামের এক আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর, চুরি ও মারপিটের অভিযোগ আনা হয় পিন্টুসহ ১১জনের বিরুদ্ধে। এ মামলার বাদি ছিলেন ভূঞাপুরের গাবসারা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ভূইয়া।

এভাবে অসংখ্য মামলা দিয়ে হয়রানি, রাজনৈতিক ও পারিবারিকভাবে হেনস্থাসহ নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টু। আবদুস সালাম পিন্টু টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলাধীন যমুনা বিধোত গুলিপেচা গ্রামের ডা. মরহুম মহিউদ্দিন মিয়ার জ্যৈষ্ঠ সন্তান। ডা. মহিউদ্দিন এলাকায় মহু ডাক্তার নামে পরিচিত ছিলেন।

৭১-এ মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি কাদেরিয়া বাহিনীর আঙ্গুর কোম্পানী, হাকিম কোম্পানী, ভোলা কোম্পানী ও আরজু কোম্পানীর সকল সদস্যকে বিনামূল্যে চিকিৎসা দিয়েছেন। সিরাজকান্দির চরে যমুনা নদীতে পাক বাহিনীর ভারী যুদ্ধাস্ত্র বহনকারী একটি জাহাজ মুক্তিবাহিনী ডুবিয়ে দেয়। সে সময়ে এটি ছিল আলোড়ন সৃষ্টিকারী এক যুগান্তকারী ঘটনা। সে সময় এই ঘটনা দেশে বিদেশে আলোচনার ঝড় তোলে।

রাতারাতি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে কাদের সিদ্দিকীকে বাঘা সিদ্দিকী উপাধি দিয়ে সংবাদ প্রচার করা হয়। এই খবরে গোটা দেশবাসী উৎফুল্ল হয়ে উঠে। মুক্তিযোদ্ধাদের মতে, ভারী সমরাস্ত্র বোঝাই ওই জাহাজটি উত্তরবঙ্গ সীমান্তে পৌঁছতে পারলে মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ অনেকটা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়তো। জাহাজ ডুবিয়ে দেয়ার সাথে জড়িত মুক্তিযোদ্ধারাও এসে মহু ডাক্তারের বাড়ীতে আশ্রয় নেয়। তাদের মধ্যে কয়েকজন ছিল টাইফয়েড আক্রান্ত। মহু ডাক্তার তাদের সবাইকে বিনামূল্যে চিকিৎসা করেন। মহু ডাক্তারের বড় ছেলে আবদুস সালাম পিন্টু। ‘৭১ সালে পাক-বাহিনী যেদিন প্রথম ঢাকা থেকে টাঙ্গাইল মার্চ করে নাটিয়াপাড়া ব্রীজে সালাম পিন্টুর নেতৃত্বে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়।

সেখানে বেশ কিছু সময় যুদ্ধ চলার পর পাক-বাহিনীর ভারী অস্ত্রেশস্ত্রের আক্রমণে টিকতে না পেরে প্রতিরোধকারীরা প্রতিরোধ তুলে নিতে বাধ্য হন।পরে সালাম পিন্টু বাড়ী ফিরে যাবার সময় পাকুটিয়া এলাকায় দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। তাকে বহনকারী গাড়ী পুকুরে পড়ে যায়। এতে গুরুত্বর আহত হয়ে দীর্ঘদিন তিনি বাড়ীতে থেকে চিকিৎসা নেন।স্বাধীনতার পরে তিনি ওকালতি পাস করে টাঙ্গাইলে আয়কর আইনজীবী হিসাবে প্রাকটিস শুরু করেন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বিএনপি গঠন করলে তিনি টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। সেই থেকে তিনি বিএনপিতেই আছেন।

তিনি টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূইয়াপুর) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন একাধিকবার। বর্তমানে তিনি শেখ হাসিনার সমাবেশে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে দায়েরকৃত গ্রেনেড হামলা মামলার আসামী হিসাবে কারাগারে আছেন। তার ছোট ভাই আবদসু সেলিম ৭১-এ ভারতে ট্রেনিং নিয়ে প্রথমে টাঙ্গাইলে আসেন। তাদের দলটিই টাঙ্গাইলে প্রথম মুক্তিবাহিনীর আগমন। ছোট ভাই আবুল কালাম আজাদ, মুক্তি বাহিনীর হাতেম কোম্পানীর অধীনে প্লাটুন কমান্ডার আ. হাইয়ের অধীনে যুদ্ধ করেছেন।

 

এম.কন্ঠ/ ০২ ডিসেম্বর /এম.টি