ঢাকা ০২:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোটা বাতিলের দাবি

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আন্দোলন

নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশ: ০৭:৪১:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৬ জুলাই ২০২৪

ঢাকা-টাঙ্গাইল বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক অবরোধ করে সরকারি চাকরিতে কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা।

শনিবার সকাল ১১ টা হতে ১২ টা পর্যন্ত মহাসড়কের নগর জলপাই বাইপাস অবরোধ করে এই আন্দোলন করেন তারা। এতে মহাসড়কের উপায় প্রান্তে প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয় এতে অনেক মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়।
শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেয়, ‘মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাই নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।

কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে। ‘১৮-এর পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সকল গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। সেক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে। সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে। দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

তারা আরো বলেন, আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতির কবর রচনা করতে আমরা একত্রিত হয়েছি। যেকোনো বাধাকে উপেক্ষা করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবে। আমাদের দাবি একটাই, ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহাল করতে হবে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী রসায়ন বিভাগের আল আমিন বলেন, ‘মেধাবীরা যদি কোটা প্রথার কারণে নিজের যোগ্যতার যথাযথ মর্যাদা না পায় তবে তাদের অবমূল্যায়নের কারণে দেশ তার গতিশীলতা হারাবে। কোটা প্রথা দেশের মেধাবীদের বিদেশগামী করবে। মূলত এই অনাচারের বিরুদ্ধে আমাদের এই অবস্থান কর্মসূচি।’

রসায়ন বিভাগের আরো একজন শিক্ষার্থী মো. হেলাল উদ্দিন বলেন,“ আমরা স্বাধীন দেশের শিক্ষার্থী, আমাদের পূর্বপুরুষেরা বৈষম্যেও জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন করেনি। আমরা বৈষম্যের শিকার হতে চাই না। বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী এবং উপজাতি কোটা ব্যতীত সকল প্রকার মোটা বাতিল চাই।”

বায়োটেকনোলজি বিভাগের মো. হাফিজ বলেন, ‘একটি দেশের বিচার ব্যবস্থা দেশের মানুষের আশা ভরসার প্রতীক, কিন্তু আদালতের সিন্ধান্ত যখন জনগণের ইচ্ছার বিপরীতে যায় তখন তারা স্বাভাবিকভাবেই বিক্ষোভ করবে। আদালতের কোটাপ্রথাকে প্রশয় দেওয়া মূলত মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে কটাক্ষ করার মত ধৃষ্টতার সমান। কোটা প্রথার মাধ্যমে তারা যে বৈষম্যেও সৃষ্টি করছে সেই বৈষম্য বহাল রাখতে তারা বদ্ধ পরিকর। আমরা আমাদের প্রাণের দাবি, অস্তিত্বেও দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

কয়েকজন যাত্রী ও বাস চালক বলেন, কোটা আন্দোলনের কারণে তারা মহাসড়কে দুই থেকে আড়াই ঘন্টা যাবত অবস্থান করছে এতে তাদের ভোগান্তি হলেও এই আন্দোলনের সাথে সহমত পোষণ করেছেন।

টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লোকমান হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীরা সড়ক থেকে সরে গেছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হবে।

এম.কন্ঠ/  ০৬ জুলাই /এম.টি

নিউজটি শেয়ার করুন

কোটা বাতিলের দাবি

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আন্দোলন

প্রকাশ: ০৭:৪১:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৬ জুলাই ২০২৪

ঢাকা-টাঙ্গাইল বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক অবরোধ করে সরকারি চাকরিতে কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা।

শনিবার সকাল ১১ টা হতে ১২ টা পর্যন্ত মহাসড়কের নগর জলপাই বাইপাস অবরোধ করে এই আন্দোলন করেন তারা। এতে মহাসড়কের উপায় প্রান্তে প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয় এতে অনেক মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়।
শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেয়, ‘মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাই নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।

কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে। ‘১৮-এর পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সকল গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। সেক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে। সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে। দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

তারা আরো বলেন, আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতির কবর রচনা করতে আমরা একত্রিত হয়েছি। যেকোনো বাধাকে উপেক্ষা করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবে। আমাদের দাবি একটাই, ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহাল করতে হবে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী রসায়ন বিভাগের আল আমিন বলেন, ‘মেধাবীরা যদি কোটা প্রথার কারণে নিজের যোগ্যতার যথাযথ মর্যাদা না পায় তবে তাদের অবমূল্যায়নের কারণে দেশ তার গতিশীলতা হারাবে। কোটা প্রথা দেশের মেধাবীদের বিদেশগামী করবে। মূলত এই অনাচারের বিরুদ্ধে আমাদের এই অবস্থান কর্মসূচি।’

রসায়ন বিভাগের আরো একজন শিক্ষার্থী মো. হেলাল উদ্দিন বলেন,“ আমরা স্বাধীন দেশের শিক্ষার্থী, আমাদের পূর্বপুরুষেরা বৈষম্যেও জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন করেনি। আমরা বৈষম্যের শিকার হতে চাই না। বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী এবং উপজাতি কোটা ব্যতীত সকল প্রকার মোটা বাতিল চাই।”

বায়োটেকনোলজি বিভাগের মো. হাফিজ বলেন, ‘একটি দেশের বিচার ব্যবস্থা দেশের মানুষের আশা ভরসার প্রতীক, কিন্তু আদালতের সিন্ধান্ত যখন জনগণের ইচ্ছার বিপরীতে যায় তখন তারা স্বাভাবিকভাবেই বিক্ষোভ করবে। আদালতের কোটাপ্রথাকে প্রশয় দেওয়া মূলত মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে কটাক্ষ করার মত ধৃষ্টতার সমান। কোটা প্রথার মাধ্যমে তারা যে বৈষম্যেও সৃষ্টি করছে সেই বৈষম্য বহাল রাখতে তারা বদ্ধ পরিকর। আমরা আমাদের প্রাণের দাবি, অস্তিত্বেও দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

কয়েকজন যাত্রী ও বাস চালক বলেন, কোটা আন্দোলনের কারণে তারা মহাসড়কে দুই থেকে আড়াই ঘন্টা যাবত অবস্থান করছে এতে তাদের ভোগান্তি হলেও এই আন্দোলনের সাথে সহমত পোষণ করেছেন।

টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লোকমান হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীরা সড়ক থেকে সরে গেছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হবে।

এম.কন্ঠ/  ০৬ জুলাই /এম.টি