নাগরপুরে ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবির মামলায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তাপস কারাগারে
নাগরপুর উপজেলার বন কর্মকর্তা খন্দকার ওয়াহিদুজ্জামানের কাছে দশ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবির মামলায় নিষিদ্ধ সংগঠন দেলদুয়ার উপজেলার লাউহাটী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার তাপস (৪৬) কে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) টাঙ্গাইল বিজ্ঞ জুডিঃ ম্যাজিঃ নাগরপুর আমলী আদালতে হাজিরা দিতে এলে বিচারক ইসরাফিল হোসেন তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে ২৭ অক্টোবর আদলত নালিশ আমলে নিয়ে আসামীদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। দীর্ঘদিন ধরে আসামীরা নাগরপুর উপজেলার মোকনা ইয়নিয়নের জগতলা গ্রামের বন কর্মকর্তা খন্দকার ওয়াহিদুজ্জামানের কাছে ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি, বাড়িঘর ভাংচুরসহ মেরে ফেলার হুমকি দেয়ায় গত ২৭ অক্টোবর এ মামলাটি করেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, লাউহাটী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার তাপস (৪৬), উত্তম কুমার ঘোষ (২৮)সহ অপরিচিত ৫/৭ জন এলাকায় চাঁদাবাজী সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করিয়া ত্রাস সৃষ্টি করিয়া আসিতেছে। তাহারা রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতার ছত্র ছায়ায় বিভিন্নভাবে অপরাধ করিয়া বেড়ায়। আমি বন বিভাগে দীর্ঘদিন উচ্চ পদে চাকুরীরত থাকায় আসামীদ্বয় তাহাদের বাহাম ভূক্ত অপরিচিত ৫/৭ জন লইয়া আমাকে টার্গেট করিয়া বিভিন্ন সময় রাস্তা ঘাটে আমার নিকট দশ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করিয়া আসিতেছে। আমি তাহাদের কথায় কর্ণপাত না করায় আসামীদ্বয় ও তাহাদের বাহাম ভূক্ত ৫/৭ জন অপরিচিত লোকজন তাহাদের নিকটে থাকা অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রসহ দেশীয় অস্ত্র-সন্ত্র লইয়া বিগত ইং ১২/০৯/২০২৫ খ্রিঃ তারিখে বিকাল ৪টার দিকে আমার বসতবাড়ীতে প্রবেশ করে আমাকে অস্ত্র-সন্ত্র দ্বারা খুন জখমের হুমকি দেয় এবং আমার নিকট ১নং আসামী ২নং আসামীর সক্রিয় সহযোগীতায় ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে উক্ত টাকা ১০ দিনের মধ্যে তাহাদের দিতে বলে। অন্যথায় আমাকে খুন করিয়া লাশ গুম করিয়া ফেলার হুমকি দেয়। ৫/৭জন অপরিচিত লোকজন উক্ত আসামীদ্বয়ের সহিত থেকে সক্রিয় সহযোগীতা করে। বাড়ীর লোকজনের মধ্যে আমার স্ত্রী শামীমা সুলতানাকেও আসামীরা দশ লক্ষ টাকা চাঁদা না দিলে খুন করার হুমকি দিয়া চলিয়া যায়। আসামীদের দেওয়া সময়সীমা মধ্যে আসামীদের সহিত আমি কোন যোগাযোগ না করিলে বিগত ইং ২৪/১০/২০২৫ খ্রিঃ তারিখ সকাল ০৮.০০ ঘটিকার সময় উল্লেখিত আসামীদ্বয় সহ তাহাদের বাহাম ভুক্ত অপরিচিত ৫/৭ জন মারাত্বক অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হইয়া আমার বসতবাড়ীতে অনধিকার প্রবেশ করে ১-২ নং আসামীদ্বয় আমি বাড়ীতে না থাকায় পুনরায় আমার স্ত্রীর নিকট দশ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে।
আমার স্ত্রী চাঁদা দিতে অস্বীকার করিলে আসামীগন পরস্পর যোগসাজশে আমার বসত ঘরে ঢুকে আসবাবপত্র, টিনের বেড়া, দরজা, জানালা, আলমারী, ড্রেসিং টেবিল, সুকেজ তাদের হাতে থাকা হকষ্টিক, লোহার রড দিয়া ভাংচুর করে। এতে কমপক্ষে এক লক্ষ টাকার ক্ষতি করে। এসময় আলমারীর তালা ভেঙে ১নং আসামী আলমারী থেকে ৪২ হাজার টাকা জোড় পূর্বক চুরি করে। আমার স্ত্রীর ডাকচিৎকারে আশেপাশের লোকজন আসলে আসামীরা আমাকে বাড়ীতে না পেয়ে সুযোগমত পাইলে খুন করিয়া লাশ গুম করার হুমকি দিয়ে চলে যায়।
এ বিষয়ে বন কর্মকর্তা খন্দকার ওয়াহিদুজ্জামান ২৭ অক্টোবর নাগরপুর আমলী আদালতে একটি চাঁদাবাজির অভিযোগ করেন। আদালত উক্ত অভিযোগ আমলে নিয়ে আসামীদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। খন্দকার ওয়াহিদুজ্জামানের স্ত্রী গুরুতর অসুস্থ্য থাকার কারনে তার স্ত্রীসহ তিনি কুমুদিনী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য অবস্থান করছেন। তাদের অনুপস্থিতেও ৫ নভেম্বর আদালত থেকে সমন পাওয়ার পরও উত্তেজিত হয়ে একাধিকবার বাড়িতে হামলা ও ভাংচুরের চেষ্টা করেন। স্থানীয়রা ভাংচুরে বাধা দেয়াতে ভাংচুর করতে না পেরে ক্ষিপ্ত হয়ে ২ নম্বর আসামী উত্তম কুমার ঘোষ বাদি গত ১১ নভেম্বর বন কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দেলদুয়ার আমলী আদালতে একটি মিথ্যা ও কাউন্টারী (পাল্টা) মামলা করেন। যা পিবিআইতে তদন্ত রয়েছে।
স্থানীয় ও আদালত সূত্রে জানাযায়, এক নম্বর আসামী তাপসের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা হয়। যার মামলা নং-১৭/২০২৫ইং। যাহা মামলা চলমান রয়েছে। তাপস কত ভয়ংকর সন্ত্রাসী যে তার আপন চাচাতো ভাইয়েরাও সন্ত্রাসীর ছোবল হতে রক্ষা পায় নাই। যার পরিপ্রেক্ষিতে তার চাচাতো ভাই খন্দকার সোলায়মান একটি মামলা করেন। যার মামলা নম্বর-১৪৪১/২০২৩ইং। এরপর আরেক চাচাতো ভাই খন্দকার রফিকুল ইসলাম সুমন বাদী হয়ে তাপসের বিরুদ্ধে মামলা করেন। যার মামলা নম্বর-১৫০৬/২০২৩ইং। যাহা মামলা চলমান। তার এসব সন্ত্রাসী কার্যকলাপের প্রধান সেনাপতি দুই নম্বর আসামী উত্তম কুমার ঘোষ, লাউহাটী ইউনিয়নের এবং মোকনা ইউনিয়নের কিছু মেম্বার সার্বিক সমর্থন দিয়ে যায়। যে কোন অপরাধে উত্তমকে ব্যবহার করা হয় এবং সবজায়গায় উত্তম সংখ্যালঘু হিসেবে ছাড় পেয়ে যায়।
এম.কন্ঠ/ ২৩ নভেম্বর /এম. টি

























