রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ছাড়া টাঙ্গাইল জেলা আ.লীগের সভাপতি ফারুকের দাফন সম্পন্ন
টাঙ্গাইলে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর একুশে পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ফজলুর রহমান খান ফারুকের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার সকাল ৯ টা ৪০ মিনিটে নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৮০ বছর।
বিকেলে জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা ফারুকের জানাযায় রাষ্ট্রীয় সম্মাননা না দেয়ার দাবিতে জেলা প্রশাসকের বাসভবণের সামনে বিক্ষোভ করে। পরে বাদ আছর টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় কবরস্থানে নামাজে জানাযা শেষে দাফন করা হয়। এ সময় সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, ও পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ফারুকের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে তার বাড়িতে জেলার বিভিন্ন স্তরের মানুষ সমবেদনা জানাতে জড়ো হলেও তার ছেলে সাবেক সংসদ সদস্য খান আহমেদ শুভ ও নিজ দলের কোন নেতাকর্মীদের দেখা যায়নি। সাম্প্রতিক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলার আসামী ছিলেন তিনি ও তার ছেলে খান আহমেদ শুভ।
তার পারিপারিক সূত্র জানায়, দীর্ঘ দিন যাবত ফারুক শারীরিক নানা সমস্যা ভুগছিলেন। শনিবার সকালে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পরলে তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফজলুর রহমান ফারুক ১২ অক্টোবর ১৯৪৪ সালে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের ওয়ার্শী ইউনিয়নের কহেলা গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞান বিভাগে মাস্টার্স পাস করেন। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ফজলুর রহমান খান ফারুক সাবেক গণপরিষদ সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য এবং টাঙ্গাইল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন।
ফারুক ১৯৬০ সালে ছাত্রলীগের রাজনীতি শুরু করেন। ১৯৬২ সালে টাঙ্গাইল মহকুমা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ৬৫ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০ সালে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন।
তিনি ১৯৭০ সালের গণ পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ৬ দফা আন্দোলন ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণসহ তৎকালীন সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে টাঙ্গাইল-৭ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৪ সালে বাকশাল গঠিত হলে টাঙ্গাইল জেলা বাকশাল এর যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন।
১৯৮৪ সাল থেকে ২০১৫ সালের ১৭ আক্টাবর পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ২০১৭ সালে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের টাঙ্গাইল জেলা শাখার সভাপতি হিসাবে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
এম.কন্ঠ/ ১৯ অক্টোবর /এম.টি