কাজ ফেলে ঠিকাদার উধাও, ৩ বছর ধরে ভোগান্তিতে ৪১ গ্রামের মানুষ
একপাশে অসমাপ্ত সেতু আর অন্য পাশে বিকল্প কাঁচা রাস্তা। ৩ বছর ধরে অবহেলায় পড়ে আছে টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে দেওপাড়া ইউপির খাকুরিয়ার ৫২ মিটার সেতুর নির্মাণকাজ। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলা এবং কাজের এমন ধীর গতিতে সেতুটি মানুষের গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে ৪১ গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, সেতুটি মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে একাংশ ভেঙে যায়। পরে সেতুটি পুনর্নির্মাণের জন্য ২০২১ সালের ২১ সেপ্টেম্বর মাস থেকে ৪ কোটি ২১ লাখ ১০ হাজার ৫৪৪ টাকা ব্যয়ে আবার সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হলেও তা থেমে যায়। ঢাকা এসই সাদিয়া অ্যান্ড সামিয়া জয়েণ্টভেঞ্চার নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ কাজ পায়। কিন্তু ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি স্থানীয় সাইফুল ইসলামকে কাজটি করার জন্য সাব-ঠিকাদার নিয়োগ করে দেয়।
সাব-ঠিকাদার বিকল্প সড়ক নির্মাণ না করেই মেয়াদোত্তীর্ণ সেতুটি ভাঙা শুরু করে। পরে স্থানীয়দের প্রতিবাদের মুখে কাঁদা মাটি দিয়ে পায়ে হাটা রাস্তা তৈরি করে। তিনি যথা সময়ে সেতুর কাজ শুরু পরও ২০২২ সালে এসে শেষ করার কথা থাকলেও এখনো কাজটি শেষ করতে পারেনি। ১/২ মাস কাজ করার পর অজ্ঞাত কারণে সেতুর কাজ ফেলে রেখে উধাও হয়ে যায় ঠিকাদার।
এলাকাবাসীরা বলেন, আমাদের দাবী দ্রুত সময়ের মধ্যে যেন সেতুর কাজ শেষ করা হয়।
স্থানীয় আসাদুল, সুজন, নওশাদসহ একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা হলে তারা জানান, বহু কাঙ্ক্ষিত খাকুরিয়ার সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হওয়াতে আমরা বেশ খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাদের কাজ ৩ বছরেও শেষ করতে পারেনি। অনেকদিন ধরে নির্মাণ কাজ একদম বন্ধ তাতে ৫ বছরে কাজ শেষ হবে কি না তা নিয়ে আমাদের সন্দেহ রয়েছে।
দেওপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল আমিন হেপলু বলেন, প্রায় ৩ বছর যাবত সেতুটি এভাবে স্থগিত রয়েছে। দেওপাড়া ইউনিয়নসহ আশেপাশের ৪১টি গ্রামের মানুষ এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে। আমি সবসময় দেখেছি যে মানুষ খুব ভোগান্তির মধ্যে আছে। ঠিকাদারকে বার বার চাপ দিয়েও কোন লাভে হচ্ছে না।
এ বিষয়ে জানতে সংশ্লিষ্ট সাব-ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক সাইফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে না পেয়ে তার মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি।
প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করে শীঘ্রই কাজ শুরুর আশ্বাস দিয়ে উপজেলা প্রকৌশলী একে এম হেদায়েত উল্ল্যাহ বলেন, ধলাপাড়া, দেওপাড়া ও শিমলা রোডে আমাদের ৫২ মিটার সেতুর কাজ চলমান আছে। আমাদের প্রায় ৬০ ভাগ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। আমাদের যে মূল ঠিকাদার জেলে থাকার কারণে মূলত অসুবিধাটি হয়েছে। খুব দ্রুতই নতুন করে নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
এ বিষয়ে জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, এ সেতুর নির্মাণকাজ খুব দ্রুত শুরু হবে বলে আশা করছি।