ঢাকা ০৬:৫৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ
বাসাইলে হেলমেট ও লাইসেন্স না থাকায় ৩ হাজার টাকা জরিমানা বাসাইলে প্রবাসবন্ধু ফোরামের আলোচনা সভা ঈদে ঢাকা-টাঙ্গাইল যমুনা সেতু মহাসড়কে যানজট নিরসনে মতবিনিময় সভা ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফলভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থার বাস্তবায়ন শীর্ষক শিক্ষকদের কর্মশালা বাসাইলে প্রান্তিক পেশাজীবী জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে সেমিনার ঘাটাইলে মাটি কাটার দায়ে দুই জনকে কারাদন্ড টাঙ্গাইলে কৃষক হত্যায় মা মেয়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড টাঙ্গাইলে আ.লীগের পক্ষে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের মিছিল, গ্রেফতার ১১ টাঙ্গাইলে কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের পার্টনার কংগ্রেস ছাত্রদল নেতা সাম্য’র হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে বাসাইলে অবস্থান কর্মসূচী

টাঙ্গাইলে প্রেমের বলি কিশোর রাসেল ॥ সুষ্ঠু বিচারের দাবি পরিবার ও স্থানীয়দের

নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশ: ০২:০৪:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ এপ্রিল ২০২৫

টাঙ্গাইলে প্রেমিকাকে ভিডিও কলে রেখে রাসেল (১৫) নামে এক কিশোর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা ঘটনায় পরিবারের মধ্যে শোকের মাতন চলছে। পরিবারের সদস্যরা এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচারের দাবি করছেন। পরিবার ও স্থানীয়দের অভিযোগ প্রেমের বলি হয়েছেন রাসেল।

এদিকে এঘটনায় নিহতের ভাই বুধবার রাতে আত্মহত্যা পরোচনার অভিযোগ এনে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রেমিকা জিনিয়া আক্তার তমাকে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, নিহতের বাসার পাশেই প্রেমিকা জিনিয়া আক্তার তমা বাসা। স্থানীয় লোকজন নিহতের ছেলের বাসায় ভিড় করছেন। নিহতের পরিবারের সদস্যরা এমন মৃত্যু কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেন না।

এর আগে গত বুধবার দুপুরে সদর উপজেলার ঘারিন্দা ইউনিয়নের দরুন এলাকায় রাসেলের নিজ বাসায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত রাসেল সদর উপজেলার দরুন এলাকার চান মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে পরকীয়া ওই প্রেমিকাকে গাছে বেঁধে রাখে স্থানীয়রা। এ ঘটনার পর থেকে জিনিয়া আক্তার তমার পরিবারের সদস্যরা পলাতক রয়েছেন।

স্থানীয়রা জানায়, প্রেমের সম্পর্ক ছিল রাসেল ও জিনিয়া আক্তার তমার মধ্যে। জিনিয়া আক্তার তমার বিয়ে হয়ে গেছে এক প্রফেসরের সঙ্গে এবং একটি ছেলেও আছে তাদের। কিন্ত বিয়ের পরেও জিনিয়া আক্তার তমা রাসেলের সাথে প্রেমের সর্ম্পক চালিয়ে যান। প্রথম পর্যায়ে জিনিয়া তার স্বামীকে ছেড়ে রাসেলকে বিয়ে করবে বলে আশস্ত করে। কিন্ত পরে জিনিয়া আক্তার তমা রাসলকে বিয়ে করবে না বলে জানায়। এ নিয়ে জিনিয়া আক্তার তমার সাথে রাসেলের হোয়াটসঅ্যাপে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথাবার্তা চলতে থাকে। গত ১ এপ্রিল রাসেল প্রথমে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। কিন্ত পরে বুধবার রাসেল জিনিয়া আক্তার তমাকে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ভিডিও কলে রেখে ফলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। পরে ঘরের জানালা ভেঙে রাসেলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। আত্মহত্যার বিষয়টি জানাজানি প্রেমিকা জিনিয়া আক্তার তমাকে এলাকাবাসী আটক করে গাছের সঙ্গে বেধে রাখে। পরে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী এসে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করে।

স্থানীয়দের অভিযোগ প্রেমের সর্ম্পকের কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। ঘারিন্দা ইউনিয়নের দরুন এলাকার জহিরুল ইসলামের মেয়ে জিনিয়া আক্তার তমার সাথে একাধিক ছেলের সাথে সর্ম্পক ছিলো।

নিহতের ভাই মোহাম্মদ সামি বলেন, জিনিয়া আক্তার তমার এক ছেলে সন্তান রয়েছে। জিনিয়া বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে আমার ভাইকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে। এর আগেও ওই মেয়েটি অন্য ছেলেদের এমন কাজ করেছে। জিনিয়া আক্তার তমা তার স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে আমার ভাইকে বিয়ে করার কথা বলেন। কিন্ত ঘটনার দিন  জিনিয়া আক্তার তমা আমার ভাইকে জানায় বিয়ে করবে না এবং তার স্বামীকে ডিভোর্স দিতে পারবে না। আমার ভাইয়ের সাথে কোন সর্ম্পক রাখবে না। বিষয়টি মেনে না দিতে পারায় জিনিয়া আক্তার তমাকে ভিডিও কলে রেখে আত্মহত্যা করে। আত্মহত্যার পিছনে ওই মেয়েটির হাত রয়েছে।

নিহতের বোন তানিয়া বলেন, ‘আমি ন্যায্য বিচার চাই। ভিডিও কলে আমার ভাইকে মরবার কইছে। ওই যদি ভালো হতো তাহলে আমার ভাইকে বাঁচাইতো। আমি ওই মেয়ে জিনিয়া আক্তার তমার ফাঁসি চাই।’

নিহতের বাবা চান মিয়া বলেন, আমি এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সুষ্ঠু শাস্তির দাবি করছি। এই মেয়ের জন্য আর কোন মায়ের কোল খালি না হয়।

এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল সদর থানার ওসি তানবীর আহমেদ বলেন, এঘটনায় নিহতের ভাই বুধবার রাতে জিনিয়া আক্তার তমাকে আসামী করে আত্মহত্যা পরোচনার অভিযোগ এনে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রেমিকা জিনিয়া আক্তার তমাকে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হয়েছে।

এম.কন্ঠ/  ০৪ এপ্রিল  /এম.টি

নিউজটি শেয়ার করুন

টাঙ্গাইলে প্রেমের বলি কিশোর রাসেল ॥ সুষ্ঠু বিচারের দাবি পরিবার ও স্থানীয়দের

প্রকাশ: ০২:০৪:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ এপ্রিল ২০২৫

টাঙ্গাইলে প্রেমিকাকে ভিডিও কলে রেখে রাসেল (১৫) নামে এক কিশোর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা ঘটনায় পরিবারের মধ্যে শোকের মাতন চলছে। পরিবারের সদস্যরা এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচারের দাবি করছেন। পরিবার ও স্থানীয়দের অভিযোগ প্রেমের বলি হয়েছেন রাসেল।

এদিকে এঘটনায় নিহতের ভাই বুধবার রাতে আত্মহত্যা পরোচনার অভিযোগ এনে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রেমিকা জিনিয়া আক্তার তমাকে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, নিহতের বাসার পাশেই প্রেমিকা জিনিয়া আক্তার তমা বাসা। স্থানীয় লোকজন নিহতের ছেলের বাসায় ভিড় করছেন। নিহতের পরিবারের সদস্যরা এমন মৃত্যু কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেন না।

এর আগে গত বুধবার দুপুরে সদর উপজেলার ঘারিন্দা ইউনিয়নের দরুন এলাকায় রাসেলের নিজ বাসায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত রাসেল সদর উপজেলার দরুন এলাকার চান মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে পরকীয়া ওই প্রেমিকাকে গাছে বেঁধে রাখে স্থানীয়রা। এ ঘটনার পর থেকে জিনিয়া আক্তার তমার পরিবারের সদস্যরা পলাতক রয়েছেন।

স্থানীয়রা জানায়, প্রেমের সম্পর্ক ছিল রাসেল ও জিনিয়া আক্তার তমার মধ্যে। জিনিয়া আক্তার তমার বিয়ে হয়ে গেছে এক প্রফেসরের সঙ্গে এবং একটি ছেলেও আছে তাদের। কিন্ত বিয়ের পরেও জিনিয়া আক্তার তমা রাসেলের সাথে প্রেমের সর্ম্পক চালিয়ে যান। প্রথম পর্যায়ে জিনিয়া তার স্বামীকে ছেড়ে রাসেলকে বিয়ে করবে বলে আশস্ত করে। কিন্ত পরে জিনিয়া আক্তার তমা রাসলকে বিয়ে করবে না বলে জানায়। এ নিয়ে জিনিয়া আক্তার তমার সাথে রাসেলের হোয়াটসঅ্যাপে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথাবার্তা চলতে থাকে। গত ১ এপ্রিল রাসেল প্রথমে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। কিন্ত পরে বুধবার রাসেল জিনিয়া আক্তার তমাকে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ভিডিও কলে রেখে ফলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। পরে ঘরের জানালা ভেঙে রাসেলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। আত্মহত্যার বিষয়টি জানাজানি প্রেমিকা জিনিয়া আক্তার তমাকে এলাকাবাসী আটক করে গাছের সঙ্গে বেধে রাখে। পরে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী এসে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করে।

স্থানীয়দের অভিযোগ প্রেমের সর্ম্পকের কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। ঘারিন্দা ইউনিয়নের দরুন এলাকার জহিরুল ইসলামের মেয়ে জিনিয়া আক্তার তমার সাথে একাধিক ছেলের সাথে সর্ম্পক ছিলো।

নিহতের ভাই মোহাম্মদ সামি বলেন, জিনিয়া আক্তার তমার এক ছেলে সন্তান রয়েছে। জিনিয়া বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে আমার ভাইকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে। এর আগেও ওই মেয়েটি অন্য ছেলেদের এমন কাজ করেছে। জিনিয়া আক্তার তমা তার স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে আমার ভাইকে বিয়ে করার কথা বলেন। কিন্ত ঘটনার দিন  জিনিয়া আক্তার তমা আমার ভাইকে জানায় বিয়ে করবে না এবং তার স্বামীকে ডিভোর্স দিতে পারবে না। আমার ভাইয়ের সাথে কোন সর্ম্পক রাখবে না। বিষয়টি মেনে না দিতে পারায় জিনিয়া আক্তার তমাকে ভিডিও কলে রেখে আত্মহত্যা করে। আত্মহত্যার পিছনে ওই মেয়েটির হাত রয়েছে।

নিহতের বোন তানিয়া বলেন, ‘আমি ন্যায্য বিচার চাই। ভিডিও কলে আমার ভাইকে মরবার কইছে। ওই যদি ভালো হতো তাহলে আমার ভাইকে বাঁচাইতো। আমি ওই মেয়ে জিনিয়া আক্তার তমার ফাঁসি চাই।’

নিহতের বাবা চান মিয়া বলেন, আমি এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সুষ্ঠু শাস্তির দাবি করছি। এই মেয়ের জন্য আর কোন মায়ের কোল খালি না হয়।

এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল সদর থানার ওসি তানবীর আহমেদ বলেন, এঘটনায় নিহতের ভাই বুধবার রাতে জিনিয়া আক্তার তমাকে আসামী করে আত্মহত্যা পরোচনার অভিযোগ এনে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রেমিকা জিনিয়া আক্তার তমাকে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হয়েছে।

এম.কন্ঠ/  ০৪ এপ্রিল  /এম.টি