কালিহাতীতে অভাবের তারনায় পান্তা ভাত দিয়ে ইফতার করে একটি পরিবার
টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার সল্লা চরপাড়া গ্রামে অর্থের অভাবে প্রতিদিন পান্তা ভাত দিয়ে ইফতার করেন একটি পরিবার। সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার সল্লা চরপাড়া গ্রামে রকিবুল ও লিলি বেগম দম্পত্তি অভাবের তারনায় পান্তা ভাতের সাথে ডালের বড়া দিয়ে অতিকষ্টে ক্ষুধা নিবারণ করে ইফতার করছেন তারা। তাদের পরিবারে স্বামী-স্ত্রী ছাড়াও দুই ছেলে সন্তান রয়েছে। পরিবারের উপার্জনক্ষম রকিবুল অসুস্থ্য হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন।
সবাই যখন বাহারি ইফতার তৈরীতে ব্যস্ত ঠিক সেই সময় রকিবুলের স্ত্রী লিলি বেগম শিল-পাটায় ডাল বাটায় ব্যস্ত থাকেন। এরপর পুরনো ছিদ্র কড়াইয়ে বড়া ভাজেন তিনি। মসজিদের মাইকে মুয়াজ্জিনের কন্ঠে আল্লাহু আকবর ধ্বনিতে সাদা পানিতে এই দপ্ততির ইফতার শুরু। পরে পান্তা ভাতের সাথে বড়া দিয়ে চলে ইফতার।
অসুস্থতার কারনে অর্থ না থাকায় ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অন্য সব মানুষের মতো ভালো কিছু দিয়ে ইফতার করতে পারেন না তারা। বুট মুড়ি জোটাতে না পারায় পান্তা ভাতই তাদের ইফতারের একমাত্র উপকরণ। ভিক্ষা না করে উপার্জন করে খেতে চান। সমাজের দানশীল ব্যক্তিদের কাছে পরিবারের জন্য একটি দোকান সহায়তা চান তারা।
রকিবুল দুই বছর বয়সে অসুস্থ হয়ে তার এক পা পঙ্গু হয়ে যায়। পরের বছর গলায় রাখা গামছায় আগুন লেগে পুড়ে যায় গলা। দরিদ্রতার কারনে চিকিৎসা করাতে না পারায় রকিবুল বড় হলে এভাবেই কাজ করে সংসার চালাতে থাকেন। বসে থাকার কাজ ছাড়া অন্য কাজ করতে না পারায় সবাই কাজের মুজুরি ৫০০টাকা পেলেও রকিবুল পান ২০০ টাকা। স্বাভাবিক কাজ করতে না পারায় তাকে কাজেও নিতে চান না কেউ। তাই চুক্তিতে কাজ নিয়ে স্ত্রী অথবা ছেলেকে সাথে নিয়ে কাজ করেন তিনি। দুই ছেলে থাকলেও কিছুটা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাদেরও কাজে নিতে চায়না কেউ। অভাবের তারনায় অতিকষ্টে দিন যাপন করেন এই পরিবার। সমাজের বিত্তবানদের পাশে দাড়ানোর আহ্বান জানান তারা।
এবিষয়ে কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার খায়রুল ইসলাম জানান, বিষয়টি তিনি জেনেছেন। তিনি নিজ উদ্যোগে তার পাশে দাড়ানোর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
এম.কন্ঠ/ ২৯ মার্চ /এম.টি