টাঙ্গাইলে অসহায়দের জন্য ১০ টাকায় বাজার
রাত পোহালেই মাহে রমজান শুরু। তাই সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের জন্য টাঙ্গাইল জেলা পরিষদের বস্তিতে বসানো হয় ১০ টাকার বাজার।
সোমবার সকালে শিশুদের জন্য ফাউন্ডেশন ও যুবদের জন্য ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এ বাজারের আয়োজন করা হয়।
এতে ৬০ টাকার বিনিময়ে ৪০০ টাকার পন্য কিনেছেন ক্রেতারা। এক কেজি করে চাল ও মুড়ি, আধা কেজি করে ডাল, পেঁয়াজ, ছোলা ও সয়াবিন তেল কিনে ক্রেতাদের সাশ্রয় হয়েছে প্রায় সাড়ে ৩০০ টাকা। শুভেচ্ছা মূল্যে পন্য কিনতে পেরে খুশি ক্রেতারা। মাসে অন্তত এক বাজার এমন বাজার বসানোর দাবি তাদের।
শুভেচ্ছা মূল্যে পন্য কিনে খুশি অসহায় ও দুঃস্থ মানুষেরা। এ কাজকে সাধুবাদ জানিয়ে সমাজের সামর্থ ও বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান সুধীজনরা। ১০ টাকার বাজার ছাড়াও ছিন্নমুল মানুষের মাঝে ইফতার ও ঈদ সামগ্রী দেওয়ার আহ্বান স্বেচ্ছাসেবী সংগঠকের।
১০ টাকার রমজান বাজারে মাত্র ১০ টাকায় মিলেছে মুড়ি,চাল,ডাল,ছোলা,পিয়াজ ও তেল। বস্তির প্রায় শতাধিক সুবিধাবঞ্চিত ও খেটে খাওয়া মানুষ এ বাজার থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পেরেছেন।
জেলা সদর বস্তির স্বপ্নপূরী স্কুল প্রাঙ্গণে সকাল থেকেই ভীড় জমে খেটে খাওয়া মানুষদের। তারা সবাই ১০ টাকার রমজান বাজারের ক্রেতা।
এ বাজারের ক্রেতা ভ্যান চালক আরজু মিয়া বলেন, এখন বাজারে জিনিসপত্রের যেই দাম,সেই সময়ে মাত্র ১০ টাকা করে জিনিস কিনতে পারছি এতেই খুশি আমি।
অপর ক্রেতা রেজিয়া বেগম ও সুলতানা আক্তার বলেন, রোযা ও ঈদকে কেন্দ্র নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্যের দাম বেড়েই চলছে। এতে আমাদের মতো সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষেরা সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছে। এমন বাজার প্রতি মাসেই বসা উচিত। আমার মত অনেক গরীব মানুষ উপকার পাবে এই বাজার থেকে।
সাংস্কৃতিক কর্মী সাম্য রহমান ও অ্যাডভোকেট আব্দুল গনি আল রুহি বলেন, এটি মহৎ একটি উদ্যোগ। এতে সমাজের অসহায়, দুঃস্থ ও নিম্ন শ্রেণীর মানুষের মুখে হাসি ফুটবে। তাই দেশের সামর্থ ও বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে সকল মানুষের মুখে হাসি ফুটাবো সম্ভব।
বাজারের সমন্বয়ক সামিউল ইসলাম সামি জানান, সুবিধাবঞ্চিত মানুষেরা যেন সম্মানের সাথে কেনাকাটা করতে পারেন সেজন্য শুভেচ্ছা মুল্যে পণ্য দেয়া হচ্ছে।
বাজারের ক্রেতা যারা তাদের আগে থেকেই আমরা নির্বাচিত করেছি। যাদের আর্থিক অবস্থা তেমন ভাল নয় এবং পরিবারের সদস্য সংখ্যা বেশি এমন মানুষদের অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।
১০ টাকার রমজান বাজারের উদ্যোক্তা ও সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা মুঈদ হাসান তড়িৎ জানান, রমজানে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়াতেই এমন উদ্যোগ। প্রতিটা পণ্যে ভর্তুকি দেয়া হয়েছে। একজন ক্রেতার ৩৩০ টাকা সাশ্রয় হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আরো বড় পরিসরে এমন বাজারের আয়োজন করার ইচ্ছা আমাদের। ঈদ উপলক্ষেও ১০ টাকায় ঈদ বাজার আয়োজন করার পরিকল্পনা রয়েছে।
রোযা অথবা ঈদ নয়, প্রতিটি উৎসবে এমন উদ্যোগ নেয়া হলে সমাজের অন্য সকল মানুষের মতো অসহায় দুঃস্থদের মুখে হাসি ফোটাবো সম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এম.কন্ঠ/১১ মার্চ/এম.টি