সরিষা ফুলে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন
বড় বাসালিয়া আর সেনবাড়ির বিস্তৃত ফসলী মাঠ আগাম জাতের সরিষার হলুদ ফুলে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে। শিশির ভেজা হলুদ ফুলে পাপড়িতে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন দুলছে। এই এলাকায় বন্যার সময় প্রচুর মাছ ধরা পড়ে।
বন্যার পানিতে শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে টাঙ্গাইল সদরের গালা ইউনিয়নের ছোটবাসালিয়া সেনবাড়ির বিলে বেড়াতে আসে। নৌকা নিয়ে বেড়ায়, পিকনিকের আমেজে মজা উপভোগ করে। বন্যার পর পরই এই এলাকার কৃষকেরা সরিষার বীজ ফেলা শুরু করে। আর শীতের শুরু থেকে বিস্তৃত এলাকা জুড়ে শুধু হলুদ রঙের ছড়াছড়ি সরিষা ফুল।
প্রচলিত কৃষিপণ্যের দাম না পাওয়ায় কৃষকেরা সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকছেন। কারন সরিষা এখন লাভজনক ফসল। চলতি মৌসুমে কৃষকের সরিষা চাষে বেশী আগ্রহী হয়েছেন কারন গত মৌসুমে স্থানীয় হাট বাজারে সরিষার দাম ভালো পেয়েছে। সরিষার হলুদ ফুলে ভরে গেছে, দিগন্ত জোড়া বিস্তৃত ফসলী মাঠ। চলতি মৌসুমে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকেরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জান যায়, সরিষা চাষের এবার লক্ষ্যমাত্রা ৮২ হাজার। উৎপাদন টার্গেট ১ লক্ষ ১০ হাজার ৭০০ মেন্টিকটন। আপাতত মাঠে অর্জিত হয়েছে ৮০ হাজার ৮শত ৪৪ হেক্টর। গত বছরের তুলনায় সরিষা চাষ বেশি হয়েছে। এদিকে তেল জাতীয় ফসল চাষে কৃষকদের উদ্দুদ্ধ করতে চলতি মৌসুমে কৃষক কে কৃষি প্রণোদনের অংশ হিসেবে বিনা মূল্যে উন্নত জাতের সরিষা বীজ ও সার দেয়া হয়েছে। চলতি মৌসুমে দেশে ভোজ্য তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং কম খরছে বেশি লাভ হওয়ায় কৃষকরা সরিষা চাষে ঝুঁকছেন।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফসলি মাঠে আরো সরিষা চাষের জন্য কৃষকরা জমি প্রস্তুত করছেন। অনেকে ফসলী মাঠে জলাবদ্ধতার কারনে রবিশস্য আবাদ করতে পারবেন না। তবে আগাম জাতের সরিষা ক্ষেত ফুলে ফুলে ভরে গেছে। মৌমাছিরাও মধু সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়ছে, যা দেখে কৃষক ও দর্শনাথীদের মন আনন্দে ভরে যাচ্ছে।
বড় বাসালিয়া এলাকাদের কৃষকদের সাথে কথা বলেন জানা গেছে। খরচ কম, পরিশ্রম কম আর সময়েও কম লাগে আবার দাও ভালো তাই সরিষা একটি অত্যন্ত লাভজনক ফসল। বড় বাসালিয়ার দিগন্তজোড়া শুধু শরিষা আর শরিষা। হলুদে ছেয়ে গেছে গ্রাম।
গালা ইউনিয়নের কালিবাড়ী গ্রামের কৃষক আবু বকর বলেন “৪টি ক্ষেতে চলতি বছর ৬ বিঘা সরিষা আবাদ করেছি। এখন শরিষা হওয়ার পথে। তিনি প্রতি বছর শরিয়া চাষ করেন। সরিষা বুনলে আমাদের নিড়ানী দেওয়া লাগে না। খালি হাল বাইয়া বুনি। সরিষাটা বৃষ্টি না হলে দ্রুত বেড়ে উঠে। ফলন হতে ২ মাস লাগে। গতবার থেকে বেশী ফলন করেছেন। গতবার শরিষা ৩ হাজার টাকা কেজি বিক্রি করেছি। এবারও আশায় আছি”।
এম.কন্ঠ/ ১৯ জানুয়ারী /এম.টি