ঢাকা ০৫:৩৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ
প্রশাসনের সহযোগিতায় মিয়ানমারে অপহৃত কালিহাতীর মনির ফিরলো পরিবারে ঘাটাইলে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাঝে আর্থসামাজিক উন্নয়নে ষাঁড় ও বকনা বাছুর বিতরন টাঙ্গাইলে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল টাঙ্গাইলে হুগড়া ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে ইফতার মাহফিল সোনিয়া ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী পরিবারদের সংবাদ সম্মেলন বাসাইলে জামায়াতে ইসলামীর আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল সোনালী ব্যাংক টাঙ্গাইল অঞ্চলের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত টাঙ্গাইলে সমন্বয় সভা ও সৌহার্দ্য’র ইফতার মাহফিল যমুনা রেলসেতুর উদ্বোধন, পার হওয়া যাবে সাড়ে ৩ মিনিটে মির্জাপুরে মসদই মাঠে ক্রিকেট ফাইনাল ৩ এপ্রিল

টাঙ্গাইলে লোডশেডিং এ অতিষ্ট সাধারণ মানুষ, অভিভাবকরা বিপাকে

নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশ: ০১:৫৪:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

টাঙ্গাইলে মাত্রারিক্ত লোডশেডিং অতিষ্ট হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষ। এতে প্রচন্ড গরমে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের। বিশেষ করে যাদের পরিবারে শিশু সন্তান আছে, তারা খুবই বিপাকে পড়েছেন। এছাড়াও ঘন ঘন লোডশেডিং এ ব্যবসা বাণিজ্যেও ধ্বস নেমেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। অতিরিক্ত লোডশেডিং হলেও অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল আসার অভিযোগ করেছেন গ্রাহকরা। এ থেকে সুরাহা পাওয়ার দাবি তাদের।

গ্রাহকরা জানান, টাঙ্গাইলে কয়েক দিন যাবত ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১২ থেকে ১৫ ঘন্টার বেশি সময় লোডশেডিং হচ্ছে। এতে ভ্যাপসা গরমে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে যাদের বাসা বাড়িতে শিশু সন্তান রয়েছে তারাও চরম বিপাকে পড়েছেন।

বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ গ্রাহক আছে। তার মধ্যে প্রায় ২ লাখ ১০ হাজার প্রি-পেইড মিটারের গ্রাহক। জেলায় বর্তমানে প্রায় ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকলেও প্রায় ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে।

সরেজমিন টাঙ্গাইলের শহরের বিভিন্ন মার্কেট ও কাগমারা, বাসাখানপুর, ধরেরবাড়ীসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, বিদ্যুতের কারনে ব্যবসা বাণিজ্যে জেনারেটর ব্যবহার করতে গিয়ে ব্যবসায়ীদের বাড়তি খরচ হচ্ছে। এছাড়াও অনেকেই শিশু সন্তান নিয়েও পড়েছেন বিপাকে।

শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকার ভাই ভাই রেষ্টুরেন্ট ও রেস্তোরার প্রোপাইটর আমিনুল ইসলাম দুলাল বলেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতির আমাদের খাবারের হোটেলে এমনিতেই ক্রেতার সংখ্যা কম। এছাড়াও গত দিন যাবত দুপুরে লোডশেডিং হওয়ায় ক্রেতা পাওয়া যায় না। এতে আমার ব্যবসায় ধ্বস নেমেছে।

টাঙ্গাইল শহরের ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বলেন, দিন রাত মিলে আমাদের প্রায় ৫ থেকে ৮ ঘন্টা জেনারেটর ব্যবহার করতে হয়। এতে আমাদের প্রতিদিন অতিরিক্ত প্রায় ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা খরচ বেশি হচ্ছে। তাই আমাদের মতো ব্যবসায়ীদের কথা চিন্তা করে নির্বিচ্ছন্ন বিদ্যুতের দাবি জানাচ্ছি।

সদর উপজেলার বাসাখানপুর গ্রামের সোহেল রানা বলেন, ২৪ ঘন্টায় আমরা ১০ঘন্টাও বিদ্যুৎ পাই না। বিদ্যুৎ আসার পর ১০ মিনিট থেকে আবার ৩ ঘন্টা বিদ্যুতের কোন খবর থাকে না। ঘন ঘন লোডশেডিং হলেও মাস থেকে অতিরিক্ত বিল আসেন।
ধরেরবাড়ী গ্রামের আফাজ মিয়া বলেন, একদিকে প্রচন্ড গরম, অপর দিকে ঘনঘন লোডশেডিং এ ছোট ছোট নাতি নাতনি নিয়ে খুব বিপাকে পড়েছি। যে গরম তা তো আমরা নিজেরাই সহ্য করতে পারি না। আর শিশুরা কিভাবে সহ্য করবে। তারা শুধু কান্না করে। এ বিষয়ে উচ্চ কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ কামনা করি।

সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের তাঁতশাড়ী ব্যবসায়ী আজাহার মিয়া বলেন, ঘনঘন লোডশেডিং এর কারনে টাঙ্গাইল শাড়ী উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। বিদ্যুৎ না থাকায় শ্রমিকরা স্বাভাবিকভাবে শাড়ী উৎপাদন করতে পারছেন না।

অপরজন জাহিদ হাসান বলেন, শহরের কচুয়াডাঙা ফিডারের আওতায় আমাদের এলাকার বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তবে তাদের কাছ থেকে আমরা কখনোই পুর্নাঙ্গ গ্রাহক সেবা পাই না। ফোন দিলে রিসিভ করেন না। অতিরিক্ত বিলের বিষয়েও বললে কোন তোয়াক্কা করেন না ওই অফিসের কর্মকর্তা সাহাগীর হোসেন।

এ বিষয়ে কচুয়াডাঙা বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিপনন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাহাগীর হোসেনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

টাঙ্গাইল বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বিক্রয় ও বিপনন বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান বলেন, টাঙ্গাইলে বিদ্যুতের ১৫০ মেগাওয়াট চাহিদা থাকলেও ১০৫ থেকে ১১৫ মেগাওয়াট সরবরাহ পাওয়া যায়। এই ঘাটতি লোডশেডিং এর মাধ্যমে ব্যবস্থা করা হয়।

টাঙ্গাইল বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সুপারিনডেটেন্ড ওবায়দুল ইসলাম বলেন, যে পরিমাণ বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে তাতে ঘন ঘন লোডশেডিং হওয়ার কথা না। লোডশেডিং ও অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অফিসে যোগাযোগ করলে সুরাহা পাওয়া যাবে।

এম.কন্ঠ/  ২৭ জুলাই /এম.টি

নিউজটি শেয়ার করুন

টাঙ্গাইলে লোডশেডিং এ অতিষ্ট সাধারণ মানুষ, অভিভাবকরা বিপাকে

প্রকাশ: ০১:৫৪:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

টাঙ্গাইলে মাত্রারিক্ত লোডশেডিং অতিষ্ট হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষ। এতে প্রচন্ড গরমে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের। বিশেষ করে যাদের পরিবারে শিশু সন্তান আছে, তারা খুবই বিপাকে পড়েছেন। এছাড়াও ঘন ঘন লোডশেডিং এ ব্যবসা বাণিজ্যেও ধ্বস নেমেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। অতিরিক্ত লোডশেডিং হলেও অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল আসার অভিযোগ করেছেন গ্রাহকরা। এ থেকে সুরাহা পাওয়ার দাবি তাদের।

গ্রাহকরা জানান, টাঙ্গাইলে কয়েক দিন যাবত ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১২ থেকে ১৫ ঘন্টার বেশি সময় লোডশেডিং হচ্ছে। এতে ভ্যাপসা গরমে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে যাদের বাসা বাড়িতে শিশু সন্তান রয়েছে তারাও চরম বিপাকে পড়েছেন।

বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ গ্রাহক আছে। তার মধ্যে প্রায় ২ লাখ ১০ হাজার প্রি-পেইড মিটারের গ্রাহক। জেলায় বর্তমানে প্রায় ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকলেও প্রায় ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে।

সরেজমিন টাঙ্গাইলের শহরের বিভিন্ন মার্কেট ও কাগমারা, বাসাখানপুর, ধরেরবাড়ীসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, বিদ্যুতের কারনে ব্যবসা বাণিজ্যে জেনারেটর ব্যবহার করতে গিয়ে ব্যবসায়ীদের বাড়তি খরচ হচ্ছে। এছাড়াও অনেকেই শিশু সন্তান নিয়েও পড়েছেন বিপাকে।

শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকার ভাই ভাই রেষ্টুরেন্ট ও রেস্তোরার প্রোপাইটর আমিনুল ইসলাম দুলাল বলেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতির আমাদের খাবারের হোটেলে এমনিতেই ক্রেতার সংখ্যা কম। এছাড়াও গত দিন যাবত দুপুরে লোডশেডিং হওয়ায় ক্রেতা পাওয়া যায় না। এতে আমার ব্যবসায় ধ্বস নেমেছে।

টাঙ্গাইল শহরের ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বলেন, দিন রাত মিলে আমাদের প্রায় ৫ থেকে ৮ ঘন্টা জেনারেটর ব্যবহার করতে হয়। এতে আমাদের প্রতিদিন অতিরিক্ত প্রায় ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা খরচ বেশি হচ্ছে। তাই আমাদের মতো ব্যবসায়ীদের কথা চিন্তা করে নির্বিচ্ছন্ন বিদ্যুতের দাবি জানাচ্ছি।

সদর উপজেলার বাসাখানপুর গ্রামের সোহেল রানা বলেন, ২৪ ঘন্টায় আমরা ১০ঘন্টাও বিদ্যুৎ পাই না। বিদ্যুৎ আসার পর ১০ মিনিট থেকে আবার ৩ ঘন্টা বিদ্যুতের কোন খবর থাকে না। ঘন ঘন লোডশেডিং হলেও মাস থেকে অতিরিক্ত বিল আসেন।
ধরেরবাড়ী গ্রামের আফাজ মিয়া বলেন, একদিকে প্রচন্ড গরম, অপর দিকে ঘনঘন লোডশেডিং এ ছোট ছোট নাতি নাতনি নিয়ে খুব বিপাকে পড়েছি। যে গরম তা তো আমরা নিজেরাই সহ্য করতে পারি না। আর শিশুরা কিভাবে সহ্য করবে। তারা শুধু কান্না করে। এ বিষয়ে উচ্চ কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ কামনা করি।

সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের তাঁতশাড়ী ব্যবসায়ী আজাহার মিয়া বলেন, ঘনঘন লোডশেডিং এর কারনে টাঙ্গাইল শাড়ী উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। বিদ্যুৎ না থাকায় শ্রমিকরা স্বাভাবিকভাবে শাড়ী উৎপাদন করতে পারছেন না।

অপরজন জাহিদ হাসান বলেন, শহরের কচুয়াডাঙা ফিডারের আওতায় আমাদের এলাকার বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তবে তাদের কাছ থেকে আমরা কখনোই পুর্নাঙ্গ গ্রাহক সেবা পাই না। ফোন দিলে রিসিভ করেন না। অতিরিক্ত বিলের বিষয়েও বললে কোন তোয়াক্কা করেন না ওই অফিসের কর্মকর্তা সাহাগীর হোসেন।

এ বিষয়ে কচুয়াডাঙা বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিপনন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাহাগীর হোসেনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

টাঙ্গাইল বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বিক্রয় ও বিপনন বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান বলেন, টাঙ্গাইলে বিদ্যুতের ১৫০ মেগাওয়াট চাহিদা থাকলেও ১০৫ থেকে ১১৫ মেগাওয়াট সরবরাহ পাওয়া যায়। এই ঘাটতি লোডশেডিং এর মাধ্যমে ব্যবস্থা করা হয়।

টাঙ্গাইল বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সুপারিনডেটেন্ড ওবায়দুল ইসলাম বলেন, যে পরিমাণ বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে তাতে ঘন ঘন লোডশেডিং হওয়ার কথা না। লোডশেডিং ও অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অফিসে যোগাযোগ করলে সুরাহা পাওয়া যাবে।

এম.কন্ঠ/  ২৭ জুলাই /এম.টি