বাপ-দাদার স্বপ্নপূরণ, ডা. নাজমুল গরীব মানুষের সেবা করতে চান
বাপ-দাদার স্বপ্নপূরণ করে ডাক্তার হয়ে দরিদ্র মানুষের চিকিৎসার সেবায় আত্মনিয়োগ করেছেন গালা গ্রামের মেধাবী ছাত্র মোঃ নাজমুল হুদা। টাঙ্গাইল শহরের বাইরে গালা ইউনিয়নের অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক মো. নজরুল ইসলাম ও হামিদা বেগমের একমাত্র ছেলে নাজমুল হুদা। দাদার নাম মৃত রুপচান আলী।
গত ১১ অক্টোবর শুক্রবার গালা আওয়ার সোসাইটি আয়োজনে বিনামূল্যে রুগী দেখেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিসারত ডাক্তার নাজমুল হুদা ও অর্থোপেডিক সার্জারি ডাক্তার এম এস সাজ্জাদ।
নাজমুল হুদা জানান, ছোটবেলা থেকে বাপ দাদার স্বপ্ন পূরণ করতে গ্রাম অঞ্চল থেকে অটো কিংবা নিজস্ব সাইকেল যোগে হলি চাউল্ড কিন্ডার গার্ডেন স্কুলে প্রাথমিক ও শহরের হিত্যবাহী বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৪ সালে জিপিএ ৫ পেয়ে এসএসসি পাশ করেন। এরপর ২০১৬ সালে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে জিপিএ ৫ পেয়ে মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে উত্তীর্ন হয়। শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ থেকে ২০২৩ সালে এমবিবিএস পাশ করেন। তিনি দরিদ্র মানব সেবার পাশাপাশি বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
চিকিৎসা জগতে তিনি সবসময় দরিদ্র মানুষের পাশে থাকতে চান। তিনি নিজ গ্রামে সময় পেলেই চলে আসবেন এবং বিনামূল্যে রুগী দেখবেন এটাই তার স্বপ্ন। প্রতিবেশী মন্টু চন্দ্র শীল বলেন, ছোটবেলা থেকে নাজমুলকে দেখে আসছি খুবই ভদ্র ছেলে। ও অনেক বড় মানুষ হবে তখনই বুঝতে পেরেছিলাম। আমরা গ্রামবাসী নাজমুল ডাক্তার হওয়ার কারনে আনন্দিত।
নাজমুলের কাছের মানুষ কাকা দেলোয়ার হোসেন বলেন, নাজমুল আমাার ভাতিজা। ও মেধাবী ছাত্র ছিল। মেধাকে কাজে লাগিয়ে ডাক্তার হয়ে আমাদের স্বপ্নপূরণ করেছে। দোয়া করি মানুষের সেবা করে তার লক্ষ পূরণ করুক।
গালা আওয়ার সোসাইটির পরিচালক শাহ আলম বলেন, আমার বড় ভাইয়ের ছেলে নাজমুল ডাক্তার হয়ে আমাদের মুখ উজ্জল করেছে। নাজমুল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চিকিৎসার পাশাপাশি গালা গ্রামে ছুটি পেলেই নিয়মিত বিনামূল্যে রুগী দেখবে। আপনারা সবাই ওর জন্য দোয়া রাখবেন।
বাবা নজরুল ইসলাম চোখের পানি মুছতে মুছতে বলেন, আমার বাবা মৃত রুপচান আলী তার নাতি নাজমুলকে সবসময় ডাক্তার হওয়ার জন্য উৎসাহিত করতেন। দাদা ও আমার স্বপ্নপূরণ করে নাজমুলের ডাক্তারী সেবা তিনি দেখে যেতে পারেননি। আল্লাহ সে সুযোগ দেননি। নাজমুলের ডাক্তারী পড়াশোনার পিছনে আমার সারাজীবনের প্রচুর শ্রমও ভালোবাসা দিয়েছি। এখন বাকী বিসিএস পরীক্ষা। আমি চাই ও মানুষের সেবা করে নিজ গ্রাম গালাসহ দেশের যেখানে ওর দায়িত্ব পড়ে। সেখানেই সঠিকভাবে ওর দায়িত্ব পালন করে।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের অর্থোপেডিক সার্জারি ডাক্তার এম এস সাজ্জাদ বলেন, নাজমুল খুব মেধাবী। ও দ্রুত উন্নতি করতে পারবে।
নাজমুল ক্রিকেট খেলতে খুব ভালোবাসতো এবং ভালো খেলতো। নাজমুলের খেলার সঙ্গী রাজিব, বাপ্পী, অনিক, আরজু, সজল, বিজয়সহ টাঙ্গাইল শহরের বন্ধুরা সবাই খুশি। তারা বলেন, ক্রিকেট খেলায় নাজমুল ছক্কা মারায় খুবই পারদর্শী ছিল। সেরকম ডাক্তারী পেশায়ও নাজমুল নাম্বার ওয়ান হবে এটাই আমাদের আশা।
এম.কন্ঠ/ ১৪ অক্টোবর /এম.টি